মানসম্মত খাবার, নিরাপদ পানি, দুর্বল ওয়াইফাই, গণরুমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের আবাসিক ছাত্রীরা।হল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলে অন্যতম প্রধান সমস্যা খাদ্য সমস্যা। খাবারের অতিরিক্ত মূল্য, ডাইনিং এ খাবারের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, একই তেল দিয়ে ২-৩ দিন রান্না চালিয়ে যাওয়াসহ শিক্ষার্থীদের সাথে ক্যান্টিনের কর্মচারীদের র্দুব্যবহারের অভিযোগও পাওয়া যায়। এদিকে হলে নিরাপদ খাবার পানির সমস্যা প্রকট। পানিতে বিভিন্ন সময় পোকা পাওয়া যায়। এছাড়া পানি আনার জায়গাটি স্যাঁতসেতে হওয়ায় এবং কোন ছাউনি না থাকায় বৃষ্টির সময় পানি আনা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
অপরদিকে কচ্ছপ গতির ওয়াইফাইয়ের কারণে এ্যাসাইনমেন্ট, টার্ম পেপার, থিসিসি পেপার, মনোগ্রাফসহ বিভিন্ন একাডেমিক ও ব্যক্তিগত কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন আবাসিক ছাত্রীরা। একদিকে ওয়াইফাই সংযোগ ও গতি বৃদ্ধিতে হল প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা অন্যদিকে ব্রডব্যন্ড ইন্টারনেট সংযোগের অনুমতি না দেয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আবসিক ছাত্রীদের। এছাড়া নিরাপত্তাজনিত সমস্যাও প্রকট ছাত্রীদের ওই আবাসিক হলে। রুম থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ চুরি হওয়ার ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। হলের বেশিরভাগ রুমের দরজা জানালায় সমস্যা রয়েছে। এতসব সমস্যা সমাধানে আবাসিক ছাত্রীদের তরফ থেকে বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কোন ধরণের পদক্ষেপ নেয় তাঁরা।
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের চৌধুরী হলের ১০১ নাম্বার রুমের আবাসিক ছাত্রী জারিন তাসনিম বলেন, ক্যান্টিনে খাবারের যে মূল্য তা অনেকের সামর্থে কুলায় না। সেখানে কচুর লতির দাম রাখা হয় ৩৫ টাকা। এছাড়া ক্যান্টিনের কর্মচারীরা হলের অফিসের স্টাফদের জন্য খাবার সরবরাহ করতে গেলে খুব সচেতন থাকে কিন্তু শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে তারা উদাসীন। এ ব্যাপারে প্রভোস্টকে বারবার অবগত করলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে আগে অনেক আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তিনি আসলেই কোন ব্যবস্থা নিবেন কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে।
হলের আরেক বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সৈয়দা তানজিনা বলেন, ছাত্রী হলের সংস্কারের নামে প্রভোস্টের রুম সহ আরো একটি রুমে এসি লাগানো হয়েছে। অথচ ছাত্রীদের সমস্যার ব্যাপারে হল প্রশাসন সর্বদা উদাসীন। বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট শরীফা ইয়াসমিন এ ব্যাপারে বলেন, ছাত্রীদের সাথে হলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমার কথা হয়েছে। সমস্যা নিরসনে আমি ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছি। হলের বিভিন্ন সংস্কার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এদিকে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনকে বারবার অবগত করলেও তারা গত ১ বছর ধরে হলের পানির ট্যাংক পরিষ্কার না করায় নিরাপদ পানির সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতি বছর পানির ট্যাংক পরিষ্কার করা হয় এবং এ বছর এপ্রিল মাসেও করা হয়েছে। প্রভোস্ট হলের কোন খোঁজ খবরই রাখেন না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn