সিলেট :: মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরনার্থীদের অবস্থার বিষয়টি বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করতে রোড মার্চ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। ত্রাণের বিষয়টি সেখানে মুখ্য ছিল না। রোর্ডমাচই ছিল মুখ্য। অথচ রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তার নামে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করা হচ্ছে। যা কাম্য হতে পারে না। কারো টাকা আত্মসাত করা হয়নি। যা অনুদান এসেছে তার তালিকা রয়েছে।
রবিবার সিলেট নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান হিউম্যানিটি ফর রোহিঙ্গা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও রোডমার্চের আহবায়ক সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী। রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ ও রোডমার্চ নিয়ে সমালোচনার পর রোববার সংবাদ সম্মেলন করে এর ব্যাখ্যা দেন শাহীনুর পাাশা চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত আগস্ট মাসের ২৫ তারিখ থেকে মিয়ানমারের সেনা ও বৌদ্ধরা যখন রোহিঙ্গা মুসলিম ভাই-বোন এমনকি হিন্দুদের উপর অতীতের নির্যাতনের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে বর্বরোচিত হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। বিশে^র বিবেকবান সকল মানুষ এতে স্থম্ভিত। বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করতে রোড মার্চ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ২১ সেপ্টেম্বর যথাসময়ে সিলেটের হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে রোড মার্চ কাফেলা রওয়ানা দিয়ে পথিমধ্যে পুলিশী বাঁধার মুখে রোড মার্চ সিলেটের রশিদপুর এলাকায় সমাপ্ত করতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি ছিল রোড মার্চ। ত্রাণ সংগ্রহ বা এ ব্যাপারে চাঁদা সংগ্রহের কোন সুযোগ ছিলোনা। আমাদের সবক’টি সংবাদ সম্মেলন, পোস্টার, ব্যানার, স্টিকার অথবা প্রশাসনের কাছে অবগতিপত্রের দরখাস্তের কোথাও ত্রাণ বিষয়ে কোন কথা আকারে ইঙ্গিতেও উল্লেখ ছিলো না। যেহেতু আমাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো-“রোড মার্চের কর্মসূচির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলে বিশ্ব বিবেক জাগ্রত করে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান”। সুতরাং এই রোড মার্চে যারা যেসব এলাকা থেকে হাজির হয়েছিলেন স্ব স্ব উদ্যোগে, রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে নিজের পকেটের টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে রোড মার্চ বহরে এসেছেন। কর্মসূচিতে দেশ ও বিদেশের দরদী জনতা সর্বসাকুল্যে ৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৭ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এর বাইরে যদি কেউ এক টাকা দেয়ার প্রমাণ দিতে পারেন, তাদের প্রতি ওপেন চ্যালেঞ্জ দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে শাহীনুর পাশা যারা কর্মসূচিতে দান করেছেন তাদের নামের তালিকাও প্রকাশ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মনিটরিং সেলের পক্ষ থেকে কোন গাড়ি রোড মার্চের দিন ভাড়া করা হয়নি। দু’ সপ্তাহ গণসংযোগের জন্য বিভিন্ন এলাকায় সুধীদেরে গাড়ি নিজ উদ্যোগে ভাড়া করে নিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছি। এখন কেউ যদি তার সাধ্যানুযায়ী ১০/১৫ কিলোমিটার গিয়ে ফিরে আসে, তাহলে আমাদের করার কি আছে। টেকনাফ পর্যন্ত যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়েছিলাম। পথিমধ্যে বাধাগ্রস্ত হয়ে রোড মার্চ সমাপ্ত করতে হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, হিউম্যানিটি ফর রোহিঙ্গা বাংলাদেশের অন্যতম সদস্য মাওলানা আলী নূর, মিডিয়া সমন্বয়কারী মাওলানা কবির আহমদ খান, মাওলানা মোসাদ্দিক আহমদ, আকিকুর রহমান পীর, মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদ, মাওলানা আনোয়ার হোসেন, সৈয়দ উবায়দুর রহমান প্রমুখ।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn