শিলংয়ে যেমন আছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিংলয়ে অবস্থানরত আলোচিত বিএনপি নেতা ও কক্সবাজারের সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদের অবৈধ অনুপ্রবেশ মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। আর কিছু দিন পরই ওই মামলার রায় হচ্ছে। এতে নিরপরাধ প্রমাণিত হলে দেশে ফেরার অনুমতি পেতে পারেন তিনি। আর দোষী প্রমাণিত হলে আদালতের দেয়া দণ্ড খাটতে হবে তাকে। তার সহধর্মিণী হাসিনা আহমেদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তিনি জানান, শিলংয়ের একটি বেসরকারি রেস্ট হাউজের ভাড়া করা কক্ষে অনেকটা নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন তার স্বামী বিএনপির সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। সেখানে নামাজ ও বই পড়ে সময় কাটছে তার। হৃদরোগ, কিডনি ও চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন তিনি। সম্প্রতি তার দুটি অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসার জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে শিলং থেকে দিল্লি যেতে হয় তাকে। শুধু দুই ঈদে পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে তাকে সময় দেন। সাবেক এমপি হাসিনা আহমেদ বলেন, তাদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে তাদের বাবা সালাহউদ্দিনকে খুব মিস করছে। যদিও মাঝে মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়। সবর্শেষ গত কোরবানির ঈদে শিলংয়ে দেখতে গিয়েছিলেন তারা। সেখানে সালাহউদ্দিনের সঙ্গে পালাক্রমে থাকেন তার ভাতিজারা। সংসার ও সালাহউদ্দিন আহমেদের চিকিৎসা কিভাবে চলছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কক্সবাজারের মাছের ঘেরের ব্যবসা রয়েছে। সেখান থেকে অর্জিত অর্থ ও কানাডা প্রবাসী ছেলে ও মালয়েশিয়া প্রবাসী মেয়েও আর্থিক সহায়তা করে। ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে আমি গুলশানের বাসায় থাকি।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি সড়কের ৪৯/বি ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে নেয়া হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ। যদিও এ ঘটনার পর ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে একাধিকবার জানানো হয়, এই বিএনপি নেতাকে আটক করা হয়নি। প্রায় দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর ওই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে উদ্ধার হন সালাহউদ্দিন। সেখানে পুলিশ হেফাজতের থাকা অবস্থা তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা হয়। কয়েকদিন পর শিলং আদালতে থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান তিনি। শিলংয়ে সালাহউদ্দিনের সন্ধান পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী, সরকার, বিএনপি ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
এর আগে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার পর স্বামীকে ফিরে পেতে পুলিশ, র্যাব, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছুটে বেড়ান স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা একাধিকবার জানিয়েছিলেন, সাল্লাহউদ্দিনকে আটক কিংবা গ্রেফতার করা হয়নি। বরং তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এদিকে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ রহস্য নিয়ে ওই সময় তোলপাড়ের মধ্যে তাকে খুঁজে বের করতে তিনজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ। ওই কমিটির দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তাছাড়া বিএনপিপন্থি এক আইনজীবী এ ঘটনায় ওই সময়ে উচ্চ আদালতে একটি রিটও করেছিলেন। জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেয়ার পর কক্সবাজারের এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।