টাইগার স্পিনত্রয়ীর দুর্দান্ত স্পেলে ৬ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৫৯ রানে সফরকারীদের প্রথম ইনিংস গুঁড়িয়ে ১৭১ রানের বড় লিড পায় বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ বিকালে টপ-অর্ডারদের ব্যর্থতায় কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে মুমিনুল হকের দল। দলীয় ১ রানে দুই উইকেট খোয়ায় বাংলাদেশ। তবে দিনের খেলা শেষে আত্মবিশ্বাস দেখান তাইজুল ইসলাম। বলেন, এই পিচে ২৫০ রানই জয়ের জন্য যথেষ্ট। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। স্কোর বোর্ডে ১ রানের বিপরীতে ২ উইকেট নেই বাংলাদেশের। তাও সে রানটি আসে নো বল থেকে।কিছুক্ষণ পর ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলামও (৫ রান)। তবে শেষ বেলায় অধিনায়ক মুমিনুল হক (৩১*) ও মুশফিকুর রহীমের (১০*) ব্যাটে ভর করে স্বস্তি নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ (৪৭/৩)। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ২১৮ রানে। শেষ দুই দিন স্পিনাররা উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পাবেন বলে মনে করেন তাইজুল ইসলাম। আর জয়ের জন্য ২৫০ রানকেই যথেষ্ট মনে করেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম পয়েন্টের দেখা পেতে উইন্ডিজকে বড় লক্ষ্যই দিতে চায় বাংলাদেশ। তাইজুল বলেন, ‘এই উইকেটে জয়ের জন্য ২৫০ রানই যথেষ্ট। শেষ দুই দিন উইকেট থেকে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পাবে। ভালো জায়গায় যারা বল করবে ম্যাচ তাদের পক্ষেই থাকবে। আমাদের আশা জয়ের জন্য ওদের ৩০০-৩৫০ রানের লক্ষ্য দিতে পারবো।’ রাকিম কর্নওয়ালের এক ওভারেই তামিম-শান্ত সাজঘরে ফেরায় সতর্ক বাংলাদেশ দল। প্রথম ইনিংসে জোমেল ওয়ারিক্যান দারুণ বোলিংয়ে নেন ৪ উইকেট। চতুর্থ দিনে সফরকারী স্পিনারদের খেলাটা সহজ হবে না টাইগার ব্যাটসম্যানদের। দলের হয়ে সেই কথাটাই বলেন তাইজুল। ব্যাটসম্যানদের দিলেন চ্যালেঞ্জ নেয়ার বার্তাও। তাইজুল বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে ওদের স্পিনাররা ভালো বল করেছে। দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছে। যদি ওরা ভালো জায়গায় বল করে তাহলে আমাদের জন্যও রান করা কঠিন হবে। তবে আমাদের চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে।’ গত বৃহস্পতিবার ঊরুতে চোট পাওয়া সাকিব আল হাসান গতকাল মাঠেই নামেননি। আজ চতুর্থ দিনে তার ব্যাটিং করা নির্ভর করবে চোটের অবস্থা আর দলের পরিস্থিতি বুঝে। ম্যাচে আর বোলিং করার সম্ভাবনা তার সামান্যই।
দারুণ নাটকীয়তায় ভরা ছিল চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন। আগের দিনের ২ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে শুক্রবার তৃতীয় দিনের ব্যাটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম বলেই এনক্রুমাহ বনারকে (১৭ রান) ফিরিয়ে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন তাইজুল ইসলাম। অভিষিক্ত কাইল মেয়ার্সকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। দারুণ ব্যাট করতে থাকা ব্র্যাথওয়েটকে (৭৬ রান) বোল্ড করেন নাঈম হাসান। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই কাইল মেয়ার্সকে (৪০ রান) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। প্রথম সেশনে ১১৪ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় উইন্ডিজ। লাঞ্চ বিরতির পর অভিজ্ঞ জার্মেইন ব্ল্যাকউড ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জশুয়া ডি সিলভার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা।
দ্বিতীয় সেশনটা নিজেদের করে নেয়ার পথে ছিল ক্যারিবীয়রা। তবে চা বিরতিতে যাওয়ার আগের শেষ দুই ওভারে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। নাঈম হাসানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ডি সিলভা (৪২ রান) ফিরলে ভাঙে ৯৯ রানের জুটি। পরের ওভারের প্রথম বলেই ব্ল্যাকউডকে (৬৮ রান) ফিরিয়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেন মিরাজ। চা বিরতির পর উইন্ডিজের ইনিংস স্থায়ী ছিল মাত্র ১৭ বল। ২৫৯ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা। তাদের শেষ পাঁচ উইকেট পড়ে মাত্র ৬ রানে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ পায় ১৭১ রানের লিড। ব্যাট হাতে শতক হাঁকানোর পর বোলিংয়েও দারুণ নৈপুণ্য দেখান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলার তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানের শিকার ২টি করে উইকেট। চট্টগ্রামে গতকাল ম্যাচের তৃতীয় দিনে পতন হয় ১১ উইকেটের। কেবল দিনের শেষ সেশনে দুই দল হারায় ৬ উইকেট।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৮৬ বার