শ্বশুরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মিন্নি বললেন ভিন্ন কথা
বার্তা ডেস্ক:বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী নিহত রিফাত শরিফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার শ্বশুরের করা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে গতকাল শনিবার বরগুনা প্রেসক্লাবে তার শ্বশুর দুলাল শরিফ যে সংবাদ সম্মেলন করেন তার বিরুদ্ধে লিখিত বক্তব্য দেন মিন্নি। তিনি বলেন, ‘গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে আমার স্বামী রিফাত শরিফকে নয়ন বন্ডসহ কতিপয় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করে। সেই হত্যার ভিডিও প্রকাশ পেলে স্বামীকে বাঁচানোর জন্য আমি যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রের মুখে প্রতিবাদ করেছি, তা দেখে সারা দেশের মানুষ আমার সাহসের প্রশংসা করেছেন। পরবর্তীতে আমার শ্বশুর নয়ন বন্ডসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় উল্লেখ নেই যে, আমি স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িত, বরং ওই মামলায় আমি ১ নম্বর সাক্ষী।’ মিন্নি বলেন, ‘বর্তমানে আমার শ্বশুর অসুস্থ এবং তার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যখন যা বলেন পরে তা মনে থাকে না। উল্লেখ থাকে যে, রিফাত হত্যায় আসামিরা বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমাকে হয়রানির চেষ্টা করেছে। যেমন, ফেসবুকে বিভিন্ন ছবি এডিট করে পোস্ট করেছে যা কখনোই সত্য নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে মিন্নি বলেন, ‘০০৭ নামে যে গ্রুপটি বরগুনায় যারা সৃষ্টি করেছেন তারা খুবই ক্ষমতাবান ও বিত্তশালী। তাই তারা এই বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকার জন্য আমার শ্বশুরকে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে রিফাত হত্যার বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য শনিবার বরগুনা প্রেসক্লাবে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যা সম্পূর্ণ মনগড়া ও বানোয়াট। আমার শ্বশুরের সকল বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই আমি। আমার স্বামীকে কোপানোর পরে তাকে আমি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে রেফার করার কথা শুনে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি এবং জ্ঞান ফিরলে আমি জানতে পারি।’ নিহত রিফাতের স্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বরগুনার পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই। আমি এক স্বামীহারা অসহায় নারী, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।’ গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বেলা তিনটার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়। পরদিন এই ঘটনায় রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনের নামে এবং ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেন।