সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে’র আপিল শুনানি মঙ্গলবার
উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের হাইকোর্টের রায়ে বিরুদ্ধে সরকারের আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। ৮ মে সোমবার হাইকোর্টের দেয়া রায় পাঠের মধ্যদিয়ে এ শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে এ শুনানি চলে। আগামীকাল ৯ মে মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময়ের আবেদন জানালেও তা মঞ্জুর করেননি সর্বোচ্চ আদালত। এরপর হাইকোর্টের দেওয়া রায় পড়ে শোনান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।গত ০৮ ফেব্রুয়ারি এ শুনানিতে ১২ জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু বা আইনি সহায়তাকারী) নিয়োগ দেন আপিল বিভাগ। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা হলেন- ড. কামাল হোসেন, কামাল হোসেন, এ এফ হাসান আরিফ, আজমালুল হোসেন কিউসি, রফিক-উল হক, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, টিএইচ খান, এম আই ফারুকী, এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল ও শফিক আহমেদ। অ্যামিকাস কিউরিদের মধ্যে ড. কামাল হোসেন, এম আমীর-উল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ ও আজমালুল হোসেন কিউসি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হ।। সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ০৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ০৯ নভেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। এরপরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে। সামরিক ফরমানে করা পঞ্চম সংশোধনীতে এ ক্ষেত্রে ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ষোড়শ সংশোধনীতে তা বাতিল করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয় সংসদকে।