সংসদে যাওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন তারেক
বার্তা ডেস্ক:পাঁচ মাস পর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদে যোগ দেওয়া এবং দলের চেয়ারপারসনের মুক্তি দাবিতে কর্মসূচি দেওয়াসহ সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। তবে আলোচনা শেষ না হওয়ায় বৈঠক মুলতবি রেখে আগামী শনিবার (২২ জুন) ফের বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শনিবার (১৫ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এই বৈঠক চলে। পরে তা মুলতবি হলে দলের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সিনিয়র নেতারা। বৈঠকে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান স্কাইপের মাধ্যমে অংশ নেন। এসময় তিনি বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের সংসদে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়। বৈঠকে বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা ম্যাডাম খালেদ জিয়ার মুক্তি, পার্লামেন্ট, দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে আলোচনা শেষ হয়নি, আবারও এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।’ বৈঠকে উপস্থিত স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, শুরুতে তারেক রহমান কেন এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে দলীয় সংসদ সদস্যদের শপথ নিতে অনুমতি দিয়েছেন, তার কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন- কৌলশগত কারণে তাদেরকে সংসদে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এছাড়া সংসদের ন্যূনতম যে সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা কাজে লাগানোর জন্য আমরা সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন সেই সুবিধা নিয়ে সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। আর দলীয়ভাবে তাদের অনুমতি না দিলেও কয়েকজন তা মানতেন না এ নিয়ে এক ধরনের সন্দেহ ছিল। যার প্রমাণ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেওয়া জাহিদুর রহমান। তার এই ব্যাখ্যায় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সন্তুষ্ট হয়েছেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কোনও কর্মসূচি না থাকার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তখন তারেক রহমানসহ স্থায়ী কমিটির নেতারা কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে কর্মসূচির ধরন ও কবে থেকে তা দেওয়া হবে সে সব বিষয় চূড়ান্ত করা হয়নি। আগামী বৈঠকে তা চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যেসব জেলা ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে তা দ্রুত ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়। স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য জানান, বৈঠকে ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে চলমান সংকটের বিষয়টি তোলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তখন অন্যরা বলেন- ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা কাজ করছেন। তারা সমাধান করতে না পারলে পরে আমরা বসবো। তারেক রহমান তখন আর এই বিষয়ে কোনও কথা বলেননি। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন ৩১ ডিসেম্বর স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে যুক্ত হোন তারেক রহমান। এরপর নানা সময়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা সারলেও তা আনুষ্ঠানিক রূপ পায়নি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,
মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পরে রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দলের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সিনিয়র নেতারা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মামলাগুলো কীভাবে পরিচালনা করা যায়, তাকে মুক্ত করা যায়, কতগুলো মামলা আছে এসব বিষয়ে কথা হয়েছে। আইনজীবীরা কে কী দায়িত্ব পালন করবেন তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করবো। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও ব্যারিস্টার মীর হেলাল।-বাংলা ট্রিবিউন