দীর্ঘদিন পর কমিটি ঘোষণার পরও সঙ্কট কাটেনি সিলেট মহানগর বিএনপির। প্রায় ১৪ মাস পর সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত নেতাকর্মীদের কেউ স্বাগত জানিয়েছেন পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে। আবার কেউবা এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করছেন। সব মিলেই নতুন কমিটি নিয়েও চলছে নানা মেরুকরণ। দীর্ঘদিনেও ‘বিভক্তির’ বেড়াজাল থেকে বের হতে পারেননি নগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সোমবার সিলেট মহানগর শাখার কমিটি ঘোষণার পরই প্রথম সভাকে ঘিরে এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে দাঁড়ালো। নগরীর তাঁতিপাড়ায় অনুষ্ঠিত সিলেট মহানগর বিএনপির ওই জরুরীসভায় অনুপস্থিত ছিলেন দলের বেশ ক’জন নেতা। অপরদিকে একই সময়ে মহানগর বিএনপির ব্যানারে পৃথক আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হয় নগরীর আম্বরখানায়।

সোমবার বিকাল ৫ টায় নগরীর তাঁতীপাড়ায় নগর বিএনপি সভাপতি নাসিম হোসাইনের বাসভবনে জরুরি সভায় নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ এবং দপ্তর সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদকবৃন্দকে উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়। সেই অনুযায়ী সভাতে এসব পদবিধারী নেতারা উপস্থিত থাকলেও বেশ ক’জন নেতা অনুপস্থিত ছিলেন। ওই সভাতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর শাখার সভাপতি নাসিম হোসাইন ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। এদিকে ওই সভাকে পাশ কাটিয়ে ঠিক একই সময়ে অনুরূপ পৃথক সভাটি অনুষ্ঠিত নগরীর আম্বরখানায়। মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটি আসার পর বিভিন্ন ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে নেতৃবৃন্দের জরুরী মতবিনিময় হয় ওই সভাতে।

আম্বরখানার সভাতে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর শাখার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, ডা. নাজমুল ইসলাম, উপদেষ্টা মো. ছাইদুর রহমান, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক কামাল মিয়া, সদস্য মো. আমিনুর রশীদ খোকন, সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক সেলিম আহমদ, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক সোহেল মাহমুদ, সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. মাসুক আহমদ, সহ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মনজুর হোসেন (মজনু), প্রশিক্ষণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুছ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিগত কাউন্সিলে নির্বাচিত একজন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বেশ ক’জন নেতাকর্মী। এদিকে দু’টি পক্ষের কোনো পক্ষের সভাতেই যোগ দেননি বেশ ক’জন নেতা। এ তালিকাতে আছেন সহ সভাপতি সুদিপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট শামীম সিদ্দিকী, সৈয়দ মঈন উদ্দিন সোহেল ও কাউন্সিলর দিনার খান হাসু, সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, মাহবুব চৌধুরীসহ আরো বেশ ক’জন পদবীধারী নেতা। মহানগর বিএনপির কমিটিতে অসন্তোষ নিয়ে নবগঠিত কমিটির সহ সভাপতি ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন- ‘কমিটিতে যে পদ পেয়েছি তাতে যতটুকু আনন্দিত হওয়ার কথা ছিল, ‘ঢাউস’ কমিটি দেখে তাতে তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছি। এতোদিন কর্মীবান্ধব দল ছিল বিএনপি, এখন সেটি নেতাবান্ধব দলে পরিণত হলো।’

তিনি সোমবার বিকালে মহানগর বিএনপির জরুরি সভাতেও উপস্থিত ছিলেন। ওই সভাতে বক্তব্য রাখেন শামীম। সভায় ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন- অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাজনৈতিক জেষ্ঠ্যতা রক্ষা হয়নি। অনেক জুনিয়রকে সিনিয়র নেতাদের উপরের পদ দেয়া হয়েছে। এতে কমিটি ভারসাম্য হারিয়েছে। এছাড়া দলের পরীক্ষিত, ত্যাগী ও বিগত আন্দোলন সংগ্রামে যারা রাজপথে ছিল তাদেরকে কমিটিতে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি এসব ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের পাশাপাশি মহানগরীর সকল ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়নের দাবি জানান।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn