সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ আজ
সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি না পেয়ে আজ দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল দলটির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশি অভিযানের প্রতিবাদে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ কর্মসূচির অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। রিজভী আহমেদ বলেন, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় পুলিশের অনুমতি না দেয়াতে আবারও প্রমাণিত হলো, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পুলিশ যে হানা দিয়েছিল সেটি সরকারপ্রধানের নির্দেশেই পূর্ব-পরিকল্পিত নীল-নকশার অংশ। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না দেয়ায় আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এর প্রতিবাদের বৃহস্পতিবার সারা দেশে জেলা সদর, মহানগর ও ঢাকা মহানগরের থানায় থানায় প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। এদিকে রমনা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার শেখ মারুফ হোসেন সরদার বলেছেন, ‘একই দিনে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশের আবেদন করেছিল। যে কারণে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।’ তবে রিজভী আহমেদ বলেন, আমি ডিসি রমনার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জয়েন্ট কমিশনার অপারেশনের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলেন। আমাদের দুইজন কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও কথা বলার সুযোগ পাননি। আওয়ামী লীগ একইদিন সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের আবেদন করেছে এমন কোনো কথা পুলিশ আমাদের জানায়নি। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, সরকার ক্ষমতার উচ্চ বলয় থেকে পতন হওয়ার আশঙ্কায় বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ করার সকল গণতান্ত্রিক অধিকারকে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রেখেছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় সংগঠনে পরিণত করে বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ বানচাল করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন পুলিশি অনুমতির ওপর নির্ভরশীল। গণতন্ত্রকে পুলিশের ইচ্ছাধীন করা হয়েছে। গণতন্ত্রের পরিসর পুলিশি অনুমতির দ্বারা নির্ধারিত হয়। রিজভী বলেন, গণবিচ্ছিন্ন সরকার জনসমাবেশকে ভয় পায়। সেজন্য তারা আজকে সমাবেশ করতে দেয় না। বিএনপিকে এই সমাবেশ করতে না দেয়া সরকারের কুশাসনের পরিণতি। আমরা মনে করি, বর্বরোচিত কুশাসনের আর্দশ পুুলিশি রাষ্ট্র এখন বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, ২০শে মে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশির প্রতিবাদে ২১শে মে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। ২২শে মে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ডিএমপি ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাছে চিঠি দেয় বিএনপি। তিনি বলেন, সংবিধানে নির্ধারিত আইনবলে উচ্চ আদালত যখন সরকারী কব্জায় নিজেদেরকে সঁপে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দৃঢ় ভূমিকা পালন করছে তখন সরকার সেটিকে কোনভাবেই সহ্য করতে পারছে না। তাতে মধ্যযুগীয় রাজাদের মতো প্রধানমন্ত্রী নিজের নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তারে বাধা পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। সরকারের আগ্রাসী অভিযান এখন সর্বোচ্চ আদালতের দিকে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, আমিরুল ইসলাম খান আলিম ও শাহিন শওকত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।