তীব্র সমালোচনার মুখে কানাডা সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসছেন বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। শনিবার (২৯ এপ্রিল) সফরের আনুষ্ঠানিক সময়ের ৩দিন আগেই দেশে ফিরছেন অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক মজিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন ৪ কর্মকর্তা। সুনামগঞ্জসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবকয়টি হাওর যখন আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, তখন আনুষ্ঠানিক সফরে গত ১৮ এপ্রিল কানাডা সফরে যান অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক মজিবুর রহমান, পরিচালক (প্রশাসন) নুরুল আমিন, পরিচালক (জলাভূমি) ড. রুহুল আমিন এবং উপ-পরিচালক (প্রশাসন) নাজমুল আহসান। এ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (কৃষি ও মৎস্য) ড. মো. নুরুল আলম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পূর্ব নির্ধারিত একটি বিশেষ সফরে অধিদপ্তরের এ সকল কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ মোট ৯জন গত ১৮ এপ্রিল কানাডায় রওনা দেন এবং শনিবার তারা দেশে ফিরছেন।উল্লেখ্য, হাওরাঞ্চলের দুর্দিনে হাওর উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরকে দায়িত্বহীন বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের এ বিদেশ সফর তীব্র সমালোচনারও সৃষ্টি করে।

হাওরে হাহাকার, হাওর উন্নয়ন কর্মকর্তারা বিদেশ সফর

(‘দায়িত্বহীন’ বলে মন্তব্য হাওর উন্নয়ন ও অধিকার সংশ্লিষ্টদের, অধিদপ্তরের দাবি সফর পূর্বনির্ধারিত)

সুনামগঞ্জসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবকয়টি হাওর যখন আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, তখন আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফরে রয়েছেন বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের ৪ কর্মকর্তা। হাওরাঞ্চলের এ দুর্যোগকালীন সময়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরকে ‘দায়িত্বহীনতা’ বলে মন্তব্য করেছেন হাওর উন্নয়ন ও অধিকার সংশ্লিষ্ট নেতারা। অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক মজিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন ৪ কর্মকর্তা গত ১৮ এপ্রিল কানাডা সফরে যান। তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের আরো ৫ কর্মকর্তা রয়েছেন। কানাডা সফরে যাওয়া অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) নুরুল আমিন, পরিচালক (জলাভূমি) ড. রুহুল আমিন এবং উপ-পরিচালক (প্রশাসন) নাজমুল আহসান। এ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (কৃষি ও মৎস্য) ড. মো. নুরুল আলম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পূর্ব নির্ধারিত একটি বিশেষ সফরে অধিদপ্তরের এ সকল কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গত ১৮ এপ্রিল কানাডায় রওনা দেন।

তিনি বলেন, এ সফর পূর্ব নির্ধারিত ছিল, এর আগেও দুইবার সফরের দিন পরিবর্তন করা হয়। তবে আর পরিবর্তনের কোন সুযোগ না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে তারা কানাডা সফরে গিয়েছেন। এদিকে হাওরাঞ্চলের এ দুর্যোগকালীন সময়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরকে ‘দায়িত্বহীনতা’ বলে মন্তব্য করেছেন হাওর ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা। তিনি বলেন, ‘হাওরের মানুষ যখন আগাম বন্যায় ফসল হারিয়ে দুর্যোগগ্রস্ত, তখন সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিদেশ সফরে গিয়ে কর্তব্যজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।” তবে কর্মকর্তারা হাওরের জন্য আপাতত করণীয় কার্যক্রম শেষ করেই বিদেশ সফরে গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো, নুরুল আলম। তিনি বলেন, বিদেশ সফরের আগে মহাপরিচালক সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন জেলার হাওরাঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি অধিদপ্তরের কার্যক্রমে কোন বিঘ্ন ঘটাচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, অধিদপ্তরের কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে, ইতোমধ্যে হাওরের অবস্থার উপরে সকল প্রতিবেদন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বরাবর বিভিন্ন চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এ সকল চাহিদাপত্রের ভিত্তিতেই হাওরাঞ্চলের জন্য নানা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার।

গত ২৯ মার্চ থেকে অতিবৃষ্টি ও আগাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জসহ সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চল। এ অকাল বন্যায় ধ্বংস হয়েছে হাওরাঞ্চলের একমাত্র আবাদ বোরো ধানের নব্বই ভাগ ফলন, মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীও হুমকিতে। এছাড়াও গোখাদ্যের অভাবে ও অর্থসংকটে দুর্গত মানুষেরা স্বল্প মূল্যে বিক্রি করছেন তাদের গবাদি পশু। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তার ঘোষণা দেয়া হয়েছে, বিক্রি হচ্ছে ওএমএস এর চাল। তবে হাওরবাসির দাবির পরেও হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হয়নি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn