সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে ৪০ বছর পর বাবার সঙ্গে দেখা
সম্প্রতি ভারতের মুম্বাইয়ের এক আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, বিবাহ বিহর্ভূতভাবে মুহূর্তের আচমকা যৌন সম্পর্কের ফলে যে সন্তানের জন্ম হবে, পৈত্রিক সম্পত্তিতে তার কোনো ভাগ থাকবে না। তবে আইন আর বাস্তবতা সবসময় এক নয়। এমনই এক আচমকা যৌন সম্পর্কের ফলে জন্ম নেওয়া এক মেয়ে চল্লিশ বছর বয়সে এসে খুঁজে পেলেন জন্মদাতাকে। বর্তমানে ৬৩ বছর বয়স্ক এই বাবা জানতেনও না যে, ৪০ বছর আগে এক রাতের আচমকা যৌন সম্পর্কের ফলে তার ঔরসজাত একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছিল। এ বছরের বাবা দিবসে বাবা মেয়ের আবেগপূর্ণ প্রথম দেখাও হয়ে গেল। বাবা-মেয়ের এ অভূতপূর্ব মিলনে মূল ভূমিকা পালন করেছে সামজিক মাধ্যম।
জিল জাস্টামন্ড নামের এ মেয়েটি বেড়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডের লিটনটন শহরে। জাস্টামন্ডের জন্মের সময় তার মায়ের বয়স ছিল মাত্র ১৮। এ বয়সে সন্তানের দায়িত্ব নিতে হিমশিম খাওয়া জাস্টামন্ডের মা তাকে তার নানা-নানুর কাছে নিয়ে যান। একটু বড় হওয়ার পর জাস্টামন্ড তার মাকে বোন হিসেবে জানত। কিন্তু বোঝার পর সে তার আসল পরিচয় জানতে পারে ও নিজের বাবাকে খুঁজে বের করতে উদ্যত হয়।
মায়ের কাছে বাবার পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে জাস্টামন্ডের মা লিন্ডা শুধু এটুকুই বলতে পারেন, নিউ জার্সির প্যালিসেডস পার্কে ‘নিয়ারিজ বার’ বলে একটি বারে অল নামের এক তরুণের সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। ইতালির নাগরিক অল ছিল সেখানকার বারটেন্ডার। ওখানেই তাদের এক রাতের আচমকা যৌন সম্পর্ক হয়েছিল। অলের নামের শুধু প্রথম অংশই জানত লিন্ডা।
বাবা সম্পর্কে তার নামের প্রথম অংশ আর কোন বারে তিনি কাজ করতেন— এই দুটি জিনিসই শুধু জানতে পারেন জাস্টামন্ড। ফেসবুকে ‘প্যালিসেডস পার্ক’ এর একটি গ্রুপও পেয়ে যান। ১৯৭০ সাল থেকে এই প্যালিসেডস পার্কেই নিয়ারিজ বারের অবস্থান। গ্রুপের মাধ্যমে নিয়ারিজ বারের মালিক ডন নিয়ারির সঙ্গে যোগাযোগ করেন জাস্টামন্ড। নিয়ারিকে ফোন করে ১৯৭৬-৭৭ সালে তার বারে অল নামে এক ব্যক্তির সম্পর্কে জানতে চান। জাস্টামন্ডকে অবাক করে দিয়ে বার মালিক তার পুরো নাম ও পরিচয় দেন। প্রথমবারের মতো বাবার পুরো নাম জানতে পারেন তিনি, অল অন্নুনজিয়াটা।
গত ৩ এপ্রিল নিজের জন্মদিনে ফেসবুকে বাবাকে খুঁজে পান জাস্টামন্ড। সেখান থেকেই যোগাযোগ শুরু হয়ে যায় তাদের। গত ২৪ এপ্রিল অন্নুনজিয়াটা একটি প্যাটার্নিটি টেস্ট করান। তার রিপোর্ট ৯৯.৯৯৬৬ শতাংশ নিশ্চিত করে যে জাস্টামন্ডের বায়োলজিক্যাল বাবা অন্নুনজিয়াটাই। তারপর বাবা দিবসে তারা দেখা করার পরিকল্পনা করেন। সেদিন জাস্টামন্ড তার বাবার শহরে যান। সামনাসামনি দু’জনই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। একসঙ্গে বড়দিনের পরিকল্পনা করছেন তারা।