মো. রেজাউল হক ডালিম-মাত্র কয়েকদিন হলো দিপা (ছদ্মনাম) স্বামীর সঙ্গে বেঁধেছেন স্বপ্নের ঘর। তিনকথার বাঁধনে জড়ানো প্রিয়তমকে ঘিরেই তার ছুটোছুটি, উচ্ছ্বলতা। স্বামীর কাছে বায়না ধরেন, তাকে নিয়ে বেড়াতে যেতে। শরতের শেষবিকেলের মিঠেরোদ গাঁয়ে মেখে, অনুরাগের ডানায় ভর করে। কিন্তু স্বপ্নিল সেই বিকেল পেরিয়ে নববিবাহিতা দিপার জন্য যে অপেক্ষা করছিলো এক ভয়ঙ্কর সন্ধ্যা- সেটি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তিনি।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর। এক বছর আগের এইদিনের সেই ভয়ঙ্কর কালো সন্ধ্যা আজ আবারও তীব্রভাবে নাড়িয়ে দিয়ে যাবে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ওই গৃহবধূকে। যে সন্ধ্যা আচমকা ঘুরিয়ে দেয় এক বছর আগের ওই নববধূর জীবনের মোড়। এক নিমেষে অন্ধকার করে দেয় ভবিষ্যতের দিনগুলো। তিনি এখন কেমন আছেন? কোথায় আছেন? কীভাবে কাটছে তার দিন? এসব প্রশ্নের জবাব দিলেন তার স্বামী। সিলেটভিউ-কে স্বামী জানালেন, গত একটি বছর তিনি স্বামী হিসেবে নয়, বন্ধু হিসেবেই স্ত্রীর পাশে থেকেছেন। মানসিক বিপর্যয় অনেকটা কাটিয়ে ওঠেছেন তার স্ত্রী। একসঙ্গেই বসবাস করছেন তারা। ফিরেছে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে দক্ষিণ সুরমার জৈনপুরের মাইদুল ইসলাম তার ১৯ বছর বয়সী নববিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে প্রাইভেটকারযোগে শাহপরাণ (রাহ.) মাজারে ঘুরতে যান। পরে সন্ধ্যায় যান এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে। সন্ধ্যার পরমুহুর্তে এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে তারা থামেন। এ সময় কয়েক যুবক ওই স্বামী ও তার স্ত্রীকে ঘিরে ধরে।
এক পর্যায়ে প্রাইভেটকারসহ তাদেরকে জোরপূর্বক জিম্মি করে কলেজের ছাত্রাবাসের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর স্বামীকে আটকে রেখে ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের ৫ম তলা বিল্ডিং এর সামনে প্রাইভেটকারের মধ্যেই গৃহবধূকে একে একে ধর্ষণ করে আট নরপশু। তারা দম্পতির সাথে থাকা টাকা, স্বর্ণের চেইন ও কানের দুলও ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আটকে রাখে তাদের প্রাইভেটকারও।
ঘটনার পর পাগলপ্রায় অবস্থায় ছাত্রাবাস থেকে টিলাগড় পয়েন্টে এসে সেই যুবক পুলিশে ফোন দেন। পুলিশ আসতে বেশ সময়ক্ষেপণ করার সুযোগ পেয়ে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ নির্যাতিতাকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে। ঐ রাতেই নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জনকে আসামি করে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) শাহপরাণ থানায় মামলা করেন।
চাঞ্চল্যকর সেই মামলায় আসামি করা হয়- সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়ার তাহিদ মিয়ার পুত্র সাইফুর রহমান (২৮), হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ার শাহ জাহাঙ্গির মিয়ার ছেলে শাহ মো মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উমেদনগরের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), জকিগঞ্জের আটগ্রামের মৃত অমলেন্দু লস্কর ওরফে কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৬), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুরের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম (২৫), কানাইঘাট উপজেলার লামা দলইকান্দির (গাছবাড়ী) সালিক আহমদের ছেলে মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), সিলেট নগরীর গোলাপবাগ আবাসিক এলাকার (বাসা নং-৭৬) মৃত সোনা মিয়ার ছেলে আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল (২৬) ও বিয়ানীবাজার উপজেলার নটেশ্বর গ্রামের মৃত ফয়জুল ইসলামের ছেলে মিজবাউল ইসলাম রাজনকে (২৭)। তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মামলা দায়েরের পর শাহপরাণ থানাপুলিশ, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কিংবা সিলেট মহানগর পুলিশ এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। পরে মাঠে নামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯ ও সিলেট রেঞ্জের অধীনস্থ পুলিশ। ঘটনার ৩ দিনের মধ্যে ৮ আসামিকে র্যাব-পুলিশ সাড়াশি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এ দুই বাহিনী। সাইফুর রহমানকে ছাতক থেকে, তারেকুল ইসলাম তারেককে দিরাই থেকে, মাহবুবুর রহমান রনিকে হবিগঞ্জ সদর থেকে, অর্জুন লস্করকে মাধবপুর থেকে, রবিউল ইসলামকে নবীগঞ্জ থেকে ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে হরিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় আইনুদ্দিন ও মিসবাহ উদ্দিন রাজনকেও। গ্রেফতারের পর তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে পর্যায়ক্রমে ৮ আসামি আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয়। গৃহবধূকে তুলে নেয়াসহ ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে নিজেদের জবানবন্দিতে।
আদালত সূত্রে সর্বশেষ জানা গেছে, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ওই ঘটনায় দায়েরকৃত দু’টি মামলা কয়েক মাস আগে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবও পাঠানো হয়। উচ্চ আদালতের আদেশে গণধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের দু’টি মামলার বিচার কার্যক্রম একই আদালতে এক সাথে চলবে । এজন্যে নতুন করে মামলার অভিযোগও গঠন করা হবে। তবে, আগামী ধার্য্য তারিখে কোন আদালতে নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে আলোচিত গণধর্ষণের ঘটনার বিচার কার্যক্রম কম সময়ের মধ্যে সম্পন্নের লক্ষ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দু’টি প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয় এ সংক্রান্ত জেলা কমিটি। এজন্যে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা ।
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি আদালতে এ দুটি মামলার বিচার কাজ একসঙ্গে শুরু করার আবেদন করেছিলেন বাদীপক্ষ। শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটি খারিজ করে দেন। এরপরই বাদীপক্ষ মামলা দু’টির বিচার কার্যক্রম একই আদালতে সম্পন্নের জন্য জানুয়ারি মাসেই উচ্চ আদালতে একটি ফৌজদারি বিবিধ মামলা করেন। ফৌজধারি বিবিধ মামলা নম্বর -৮৯৫২/২০২১। গত ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এ মামলার শুনানি করেন । বাদীপক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ূম লিটন ও এডভোকেট সাব্রিনা জারিন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরওয়ার হোসেন বাপ্পি, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাওদুদা বেগম ও হাসিনা মমতাজ শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে আদালত মামলা দু’টির বিচার কার্যক্রম একসাথে একই আদালতে সম্পন্নের আদেশ দেন।
তার আগে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সাইফুর, রনি, তারেক, অর্জুন, রবিউল, মাসুম , আইনুল ও রাজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে ৫২ জনকে সাক্ষী রাখা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য রাজন ঘটনার ২ মাস ৮ দিন পর ১৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেন। গ্রেফতারকৃত এই ৮ আসামিই আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। ৮ আসামির মধ্যে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক ও অর্জুন লস্কর, মিজবাহুল ইসলাম রাজন ও আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ১৯ বছর বয়সী ওই নববধূকে গণধর্ষণ করে। রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম ধর্ষণে সহযোগিতা করে। বর্তমানে ৮ আসামিই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
পরবর্তীতে ৩ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা নিয়ে প্রথম শুনানি হয়। ওই দিন বাদীপক্ষ অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় সময় প্রার্থনা করেন। ১০ জানুয়ারি বাদীপক্ষের আইনজীবী অভিযোগপত্র পর্যালোচনার জন্য আবেদন করে সময় চাইলে আদালত দুই দিনের সময় নির্ধারণ করে দেন। বাদীপক্ষের আবেদনে অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করার জন্য আদালতে জমা দেওয়া বেশ কিছু নথি চাওয়া হয়। এর মধ্যে ছিল মামলার অভিযোগপত্র, সিজার লিস্ট, জিম্মানামা, স্কেচ, ইনডেক্স, ইনডেক্সের সূচি ও ব্যাখ্যা, মেডিকেল ও ডিএনএ রিপোর্ট, আসামিদের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, ২২ ধারার জবানবন্দি, আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও আসামীদের রিমান্ড আবেদনের কপি।
অপরদিকে, গণধর্ষণের ঘটনার আগে অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ঘটনার ১ মাস ২৭ দিন পর ২২ নভেম্বর অভিযোগপত্রটি জমা দেয়া হয়। ছাত্রাবাস থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনিসহ ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সকলকে আসামী করে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯/১৯এ ধারায় অভিযোগপত্রটি জমা দেয়া হয় ।
গত বছরের ১ ও ৩ অক্টোবর গ্রেফতারকৃত ৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আদালতের আদেশের পর সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার বা ওসিসির মাধ্যমে ৮ আসামির ডিএনএ সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে প্রেরণ করে পুলিশ। নমুনা সংগ্রহের প্রায় ২ মাস পর ৩০ নভেম্বর আদালতের মাধ্যমে তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট ডিএনএ রিপোর্ট এসে পৌছে। ডিএনএ রিপোর্টে ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর ও মাহবুবুর রহমান রনির ডিএনএ ‘ম্যাচিং’ পাওয়া যায়। এদিকে আইনুদ্দিন ও মিসবাহ উদ্দিন রাজন’র ডিএনএ ‘মিক্সিং’ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
ডিএনএ রিপোর্ট’র ফলে নিশ্চিত হওয়া যায়, এই ৬ জনই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছিল। আইনুদ্দিন ও মিসবাহ ধর্ষণের সময় ‘কিছু ব্যবহার করায়’ ম্যাচিং এর বদলে রিপোর্টে ‘মিক্সিং’ পাওয়া যায়। বাকি ৪ জন কোনো কিছু ব্যবহার না করে সরাসরি ধর্ষণ করেছিল।
এদিকে, এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ ও হোস্টেল সুপার জীবন কৃষ্ণ আচার্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ২ জুন দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি মো মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আদেশে বলা হয় , ‘ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের পেছনে মূলত হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে ওই কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবে ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।’ আইন সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে এ বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম মো আবুল কাশেম, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেছা ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শারমিন সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে ২০ অক্টোবর ১৭৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হাইকোর্ট বেঞ্চে জমা দেন।
ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল।
এমসি কলেজের ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে গণধর্ষণের ওই ঘটনা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। সিলেটসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের দাবানল। ঘটনার পর এমসি কলেজের ছাত্র সাইফুর রহমান, মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল ইসলামকে কলেজ কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও এই ৪ জনের ছাত্রত্ব ও সার্টিফিকেট বাতিল করে।
এখন কেমন আছেন সেই নির্যাতিত গৃহবধূ? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে সিলেটভিউ কথা বলে ওই নির্যাতিতার স্বামী মাইদুল ইসলামের সঙ্গে। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার পর আমার স্ত্রী মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়ে। তবে আমি স্বামী হিসেবে নয়, বন্ধু হিসেবেই তার পাশে থেকেছি গত একটি বছর।’
তিনি বলেন ‘মানসিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রথমে কয়েক মাস তিনি তার বাবার বাড়িতে ছিলেন। এখন আমরা দুজন একসঙ্গেই থাকছি আমাদের বাড়িতে এবং আমাদের জীবনে ফিরে এসেছে স্বাভাবিক ছন্দ। আলহামদুলিল্লাহ- আমরা ভালো আছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে মাইদুল বলেন, ‘মামলা দায়ের ও আসামিরা গ্রেফতারের পর তাদের পক্ষে বিভিন্ন ব্যক্তি ও মহল থেকে আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিলো। শুধু চাপ সৃষ্টিই নয়, আমাকে বড় অংকের টাকাও অফার করা হয়েছিলো- যাতে আপস-মীমাংসায় বিষয়টা শেষ করি। কিন্তু আমি আমার অবস্থান থেকে সরে যাইনি। প্রথম থেকেই অপরাধীদের সর্বোচ্চ কঠোর শাস্তি দাবি করে আসছি, এখনও করছি।’
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৪৫ বার