সিলেটে নিরাপত্তা জোরদার, বহিরাগতদের নগর ত্যাগের নির্দেশ
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় শেষ পর্যায়ে ভোটারদের মন জয় করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। এদিকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার (২৭ জুলাই) রাত থেকেই সিটি কর্পোরেশন এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সিলেটে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ও মোবাইল ফোর্স সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া নির্বাচনি আচরণবিধিসহ অন্যান্য বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য নগরীতে ১৮ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের মধ্যে ৯ জন জুডিশিয়াল ও ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনের সময় লাইসেন্সধারী কেউই অস্ত্রবহন কিংবা প্রদর্শন করতে পারবেন না। একই সঙ্গে নির্বাচনি এলাকায় মোটরসাইকেল ও যানবাহন চলাচলের ওপরও থাকছে নিষেধাজ্ঞা। বহিরাগতদের উপস্থিতি ঠেকাতে নগরীর আবাসিক হোটেলগুলোতে লোক না রাখার জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হোটেলগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। হোটেলগুলোতে সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোটারছাড়া বাইরের কাউকে পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ২৮ জুলাই রাত ১২টা থেকে ৩১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল নিষেধ করা হয়েছে। ২৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে ৩০ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় টেক্সিক্যাব, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, ইজিবাইক এবং যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে বহিরাগতদের সিলেট ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেউ এখানে থাকতে চাইলে যৌক্তিক কারণ ও প্রমাণ দেখাতে হবে। বহিরাগতদের ব্যাপারে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের নজর থাকবে মহানগরী এলাকার বাসাবাড়িসহ আবাসিক হোটেলগুলোতে। তিনি আরও জানান, নির্বাচনে কয়েকদিন ভোটাদের নগরীতে চলাফেরা করতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সঙ্গে রাখতে হবে। সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচনি কার্যালয়ের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা প্রলয় কুমার শাহা জানান, এবার সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ১৩৪ জন প্রিজাইডিং, ৯২৬জন সহকারী প্রিজাইডিং এবং ১৮৫২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও ভোটের দিন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে ২৯৪৮ জন পুলিশ সদস্য। সিলেট মহানগরী এলাকায় মোতায়েন থাকবে ১৪ প্লাটুন বিজিবি। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে একটি করে মোবাইল ফোর্স, ৩টি ওয়ার্ড মিলিয়ে থাকবে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে র্যাবের একটি টিম। এছাড়া প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৭ জন পুলিশ অস্ত্রসহ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। পুলিশ ছাড়াও আনসার বাহিনীও নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে। সিলেট সিটি নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ জন এবং নারী একলাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন। ৩০ জুলাই মোট ১৩৪টি ভোটকেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে।