এক দশক আগে মোবাইলের মাধ্যমে গড়ে ওঠে মোনায়েম-হাসিনার সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। সেখান থেকে বিয়ের পর সবকিছুই চলছিল ঠিকঠাক। ঘর আলো করে দাম্পত্য জীবনে আসে এক ছেলে ও এক মেয়ে। কিন্তু হাসিনার কপালে যেন বেশিদিন সুখ সইলো না। আগুনে পুড়ে নিভেছে তার জীবনপ্রদীপ। সেই আগুন কিভাবে লাগলো কিংবা কে দিল, এ নিয়ে রয়েছে রহস্য। তবে হাসিনার স্বজনদের অভিযোগ, তার স্বামী মোনায়েমই আগুন দিয়ে হাসিনাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। সিলেট নগরীর আম্বরখানা বড়বাজার এলাকার ৯৩নং বাসার বাসিন্দা মোনায়েম আহমদ (৪০)। অন্যদিকে হাসিনা বেগমের (৩৫) বাড়ি ঢাকার কোতোয়ালী থানাধীন টেকেরহাট নবাবপুরে। গত রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে আগুনে দগ্ধ হন হাসিনা। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসিনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে মারা যান হাসিনা। হাসিনার ছোটবোনের জামাই আরিফুর রহমান সিলেট নগরীতে বসবাস করেন। নগরীর সাপ্লাই এলাকায় তার ওয়ার্কশপ রয়েছে। আরিফুর রহমান সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন, প্রায় দশ বছর আগে মোবাইলের মাধ্যমে মোনায়েমের সাথে হাসিনার প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে পরিবারের সম্মতিতেই তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের মধ্যে কোন সমস্যা ছিল না। তবে প্রায় সময়ই মোনায়েমকে টাকা দিত হাসিনার পরিবার। আলী (৭) ও মোহনা (সাড়ে ৪ বছর) নামে হাসিনার দুটি সন্তান রয়েছে।

তিনি বলেন, গত রবিবার রাতে শুনি হাসিনা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আমরা মোনায়েমের বাসায় গেলে তার বোনেরা কিভাবে আগুন লাগলো তা নিয়ে কিছু বলতে পারেনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত রবিবার মোনায়েম হাসিনার কাছে এক হাজার টাকা চায়। সেই টাকা দিতে না পারায় রাতে ক্ষুব্ধ হয়ে হাসিনাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে মোনায়েম। হাসিনার মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার শাহবাগ থানায় মোনায়েমকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিয়েছেন হাসিনার মামাতো ভাই রুহেল আহমদ। এ ঘটনায় সিলেটের বিমানবন্দর থানায় মামলা করা হবে জানিয়ে আরিফুর রহমান বলেন, আমাদের কারো অবস্থা ভালো নয় এখন। সবাই একটু শান্ত হলে আমরা মামলা করবো। এদিকে, সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে হাসিনার লাশ ঢাকায় দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কথা বলতে মোনায়েম আহমদের ফোন নাম্বারে কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেন নি। সিলেট নগরীর বিমানবন্দর থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। ঘটনাটি হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন দেয়া নাকি অন্য কিছু তা তদন্তের পর বলা যাবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn