সিলেটে শিউলীকে নিয়ে নানা জল্পনা
ওয়েছ খছরু-
নাটক ও মিউজিক ভিডিওতে এক সময় পটু ছিলেন সিলেটের শিউলী। শখের বশে শোবিজ জগতে মেলে ধরেছিলেন ডানা। সেখানে খ্যাতি পেয়েছেন। কিছুটা বিতর্কও ছিল তাকে নিয়ে। এভাবেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন সিলেটে। এরপর রাজনীতি শুরু। পছন্দের জাতীয় পার্টি তার ঠিকানা। পুরোদস্তুর একজন রাজনীতিবিদ হওয়ার জন্য কাজ শুরু করেন। পেয়েছেন সফলতাও। এখন তিনি জাতীয় মহিলা পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদিকা। সিলেট মহানগরের সভাপতিও। শিউলী আক্তারকে এক নামে চিনেন সিলেটের সবাই। ভালো চিনেন পার্টির চেয়ারম্যানও। এ কারণে পার্টির চেয়ারম্যান আলহাজ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখনই সিলেটে আসেন তখনই সরব হয়ে উঠেন শিউলী। নিজ দলের মহিলাদের নিয়ে শোডাউনসহ নানা কর্মকাণ্ড চালান। আবার হঠাৎ কোথায় যেন ডুব দেন শিউলী। খুঁজে পাওয়া যায় না।
প্রায় দুই বছর অনেকটা অন্তরালে ছিলেন। রাজনীতির কর্মকাণ্ড থেকে দূরে অবস্থান করেন। সম্প্রতি আবার এসেছেন প্রকাশ্যে। তিনি মহিলাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদানের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। সংসদ নির্বাচন সামনে। এ কারণে রাজনীতির পরিমণ্ডলে উকি-ঝুঁকি মারছেন তিনি। এমনটি মনে করছেন সিলেট জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। সিলেটের বিশ্বনাথের মেয়ে শিউলী আক্তার। বিশ্বনাথ থেকে একসময় চলে আসেন সিলেটে। পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। আর ওই সময় থেকে সিলেটে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন শিউলী। নেশার ঘোরে ঢুকে পড়েন শোবিজ অঙ্গনে। সিলেটী নাটক, মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেন অনেক দিন। এতে রাতারাতি পরিচিতি পান। ওই সময় নানা ঘটনায় বিতর্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তাকে নিয়ে স্ক্যান্ডাল রটলেও দমে যাননি। সিলেটী নাটক ও মিউজিক ভিডিওতে কাজ করে যান।
পাশাপাশি শুরু করেন রাজনীতি। কিন্তু রাজনীতিতে ‘বাঁকা’ চোখ তার দিকেই ছিল। এ নিয়ে রাজনীতির মাঠে পড়েন অগ্নিপরীক্ষায়। একের পর এক অভিযোগের তীর ছিল তার দিকে। নিজের স্ক্যান্ডালের কারণে বার বার তাকে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে। এসব স্ক্যান্ডালে কখনো কখনো ঘরের ভেতরে বন্দি হয়ে থাকতে হয়েছে শিউলীকে। পাশাপাশি মহিলা পার্টিতেও পড়েন বিরোধিতার মুখে। সিলেট জাতীয় পার্টির রাজনীতিতেও তাকে নিয়ে জল্পনা কম হয়নি। এসব কিছু থেকে রেহাই পেতে ঢাকামুখী হন শিউলী আক্তার। কেন্দ্রের সঙ্গে লবিং করে এখন তিনি জাতীয় মহিলা পার্টির কেন্দ্রীয় নেত্রী। সিলেট নগরীর গার্ডেন টাওয়ারে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। এখনো তাকে নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। ইতিমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। এসব দেশে ভিজিট ভিসায় তিনি ভ্রমণ করেন। ওমরা হজও করেছেন একবার। এখন অনেকটা নীরব। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসায়ও মন দিয়েছেন। সিলেট নগরীর কুমারপাড়া এলাকার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। সেটিই পরিচালনা করছেন। সংসার, ব্যবসা এসবের কারণে এ দফা অন্তরালে ছিলেন অনেক দিন। এবার জানান দিলেন নিজ থেকে।
সম্প্রতি তিনি অন্দরমহল থেকে বেরিয়ে রাজনীতির কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়ে উঠলেন। গত বুধবার জাতীয় মহিলা পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদিকা ও সিলেট মহানগর শাখার সভানেত্রী শিউলী আক্তারের হাতে ফুল দিয়ে মহিলা পার্টিতে যোগদান করেছেন মিনারা বেগম ও ময়না বেগম। সিলেটের এক হোটেলে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা দুইজন জাতীয় মহিলা পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় শিউলী বলেন- আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি পল্লীবন্ধু এরশাদের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করে সরকার গঠন করবে এবং পলীবন্ধু এরশাদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাবে। জাতীয় মহিলা পার্টি সিলেট মহানগর সহ-সভাপতি রেজিয়া বেগমের সভাপতিত্বে ও কৃষি সম্পাদিকা রেহেনা বেগমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় মহিলা পার্টি সিলেট মহানগর সহ-সভাপতি নাজমা বেগম, বেগম আক্তার, অর্থ সম্পাদিকা রোজিনা বেগম, সদস্য সুমানা বেগম, মিতু আক্তার ও সারজানা বেগম প্রমুখ। শিউলীর এ সরব হওয়ার কারণ কী- এসব নিয়ে জাতীয় পার্টিতে চলছে আলোচনা। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা জানান, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ কারণে শিউলী সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। গেল বারও তিনি সিলেট-২ আসন থেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হতে পারেননি। এবার তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। আর এ কারণে আগে থেকে মাঠে নেমেছেন শিউলী।