সিলেটে হামলার প্রতিশোধে রাবিতে শিবির কর্মীদের বেধড়ক পিটুনি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে থাকা ছাত্রশিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে তাদের পিটুনি দেয়া হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে শিবিরের বিভিন্ন নথি, কম্পিউটার ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। আটকদের মধ্যে ১১জনকে ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে আটক করি। এর মাধ্যমে সিলেটে আমাদের ছাত্রলীগ ভাইদের উপর হামলাকারী শিবিরের জবাব দিতে পেরেছি।
আটকরা হলেন- রাবি শিবিরের সাহিত্য সম্পাদক নাবিউল ইসলাম (আরবি মার্স্টাস), শিবিরের সাথী শাহরুল আলম হিমেল (পরিসংখ্যান ৪র্থ বর্ষ), ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি সাহেদ রানা (ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষ), শামসুজ্জোহা হলের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন (ইসলামের ইতিহাস তৃতীয় বর্ষ), আশিকুল হাসান নাফিস (নৃবিজ্ঞান, মাস্টার্স), আরিফুল ইসলাম (ফার্সি মাস্টার্স), রাকিব আহমেদ (আইন দ্বিতীয় বর্ষ), মাহমুদুল হাসান (উদ্ভিদ বিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষ), শরিফুল ইসলাম (পরিসংখ্যন চতুর্থ বর্ষ), আব্দুর রাকিব (ইসলামিক ইস্টাডিজ (তৃতীয় বর্ষ), ওয়ালিউল্লাহ (আরবি মাস্টার্স) ও সন্দেহভাজন গোলাম রাব্বানী (আরবী তৃতীয় বর্ষ)।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, শিবির নেতাকর্মীদের অবস্থান জানতে পেরে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর নেতৃত্বে রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের ১৪৩ নম্বর কক্ষে সাহেব রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছাত্রলীগের নেতারা। জিজ্ঞাসাবাদে রানা শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হলের ১৪৮, ১৫০, ১৫৫, ২৪৯, ২৫৪, ২৭৬, ৩৫৮, ৩৬০ ও ৩৬২ নম্বর কক্ষে অভিযান চালিয়ে আরও ১১ জনকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে শিবিরের নথি, রিপোর্ট বই, ডায়েরি, অর্থ বিভাগের ১৯ হাজার টাকা ও শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নামের তালিকা পায় ছাত্রলীগ।
আটকের সময় শিবিরের নেতাকর্মীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। আটকদের মধ্যে ১১ জনকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে আটজনের অবস্থা গুরুতর বলে রাজশাহী মেডেকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, আটকরা শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। তাদের মধ্যে ১১ জনকে রাজশাহী মেডিকেলে এবং একজনকে থানায় আটক করে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. লুৎফর রহমান বলেন, রাতে হলে শিবির সন্দেহে পুলিশ কয়েকজনকে আটক করেছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে আরও খোঁজ নিয়ে পরে জানাচ্ছি।
– ঢাকা টাইমস