সিলেট:: প্রায় চারমাস আগে কেন্দ্রের কাছে জমা দেয়া হয়েছিল সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কমিটি জমার পরই দেখা দেয় ক্ষোভ, অসন্তোষ। অভিযোগ ওঠে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া ও অবমূল্যায়নের। এ নিয়ে দলের বঞ্চিত ও অবমূল্যায়িত নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে নালিশও করেন। ফলে আটকে যায় কমিটি অনুমোদন। শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবিত কমিটিতে ‘শুদ্ধি’ অভিযান শুরু করেছে কেন্দ্র। ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে কেন্দ্র থেকে ১১ জনকে বাদ দিয়ে শূন্যপদে ত্যাগী ও দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয়দের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার ঢাকায় তলব করা হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের। কেন্দ্র থেকে ‘শুদ্ধি’ অভিযান শুরু হওয়ায় প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে জায়গা করে নিয়ে যেসব সুবিধাবাদী নেতা স্বস্তিতে ছিলেন তাদের মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সম্মেলনের প্রায় এক বছর পর গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রের কাছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেন। এরপর প্রস্তাবিত কমিটি দুটির বিরুদ্ধে দলের দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতাদের অবমূল্যায়ন ও সুবিধাবাদীদের অতিমূল্যায়নের অভিযোগ ওঠে। মহানগর কমিটি থেকে বাদ পড়েন আগের কমিটির বেশ কয়েকজন সক্রিয় ও ত্যাগী নেতা। পরবর্তীতে বঞ্চিতরা মিলে কেন্দ্রের কাছে পাল্টা আরেকটি কমিটি জমা দেন। জেলা কমিটিতেও ত্যাগীদের অবমূল্যায়নের একই অভিযোগ ওঠে। প্রস্তাবিত দুই কমিটিতে প্রবাসী, বিএনপি-জামায়াতের সাথে আঁতাতকারী সুবিধাবাদীদের স্থান দেয়ার অভিযোগ ওঠলে কেন্দ্র থেকে ‘শুদ্ধি’ অভিযানের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর অংশ হিসেবে গত ৩১ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খানকে কেন্দ্রে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে সিলেট বিভাগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রস্তাবিত কমিটির বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধে জমা হওয়া অভিযোগগুলো তুলে ধরেন। পরবর্তীতে প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ১১ জনকে বাদ দেয়া হয়।
বাদ পড়াদের মধ্যে রয়েছেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. শাকির হোসেন শাহীন, সদস্য ফারুক আহমদ (গোয়াইনঘাট), এস এম নুনু মিয়া (বিশ্বনাথ), গোলাম কিবরিয়া হেলাল (গোয়াইনঘাট) ও জাহাঙ্গীর আলম (কোম্পানীগঞ্জ)। তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে প্রবাসে থাকা, রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়তা, বিভিন্ন সময় দলের শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ এবং স্থানীয়ভাবে জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে, জেলার পর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আগামী ৮ জানুয়ারি ঢাকায় তলব করা হয়েছে। ওইদিন মহানগরের প্রস্তাবিত কমিটির যেসব নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের নিয়ে আলোচনা হবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৈঠকে অভিযুক্ত অনেকেই কমিটি থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৮ জানুয়ারি ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে বৈঠক প্রসঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, কেন্দ্রের কাছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়া হয়েছে। এখন সেটা রদবদল করা কেন্দ্রের দায়িত্ব।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৫২ বার