আফ্রিকার দেশ সুদানের রাজধানী খার্তুমে সেনবাহিনীর নির্বিচার গুলিতে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। সামরিক বাহিনীর সদরদফতরের সামনে ‘গণতন্ত্রকামী’ নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পর পার্শ্ববর্তী নীলনদ থেকে ৪০ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ৪০ জন ‘গণতন্ত্রকামী’ বিক্ষোভকারী ছিলেন বলে জানাচ্ছে আন্দোলনকারীদের সমর্থক সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদান ডক্টরস (সিসিএসডি)। খবর গার্ডিয়ানের। গত সোমবার খার্তুমে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে ওই হামলার পর বুধবার রাতে সিসিএসডি এ খবর জানায়। এর আগে হামলায় ৬০ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। নীলনদ থেকে ৪০ জনের লাশ উদ্ধারের ফলে এ ঘটনায় নিহত বিক্ষোভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০০ জনে। দারিদ্র্যপীড়িত সুদানে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকেই রুটি ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে দেশটির রাষ্ট্রপতি বশির আল-ওমরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের হটাতে নিরাপত্তা বাহিনীর বলপ্রয়োগের কারণে এই বিক্ষোভ উল্টো তার পতনের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনে রূপ নেয়।

গত ৬ এপ্রিল থেকে খার্তুমে সামরিক বাহিনীর সদর দফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এসব ঘটনার জেরে ১১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট বশিরের পদত্যাগ ঘোষণা করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এতে আনন্দে মেতে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। তবে সে আনন্দ ছিল কিছু মুহূর্তের মাত্র। কারণ বশিরের পদত্যাগের পর ক্ষমতা নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী। পরে সামরিক বাহিনীকে বশিরেরই অংশ হিসেবে দাবি করে ফের বিক্ষোভ করতে থাকে আন্দোলনকারীরা। ১৯৮৯ সালে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থাকাকালে বশির আল-ওমর ‘অভ্যুত্থান’ ঘটিয়ে তৎকালীন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সাদিক আল-মাহদীকে উৎখাত করেন। পরে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেন তিনি। কয়েকবছর ধরে তার বিরুদ্ধে ‘সামরিক অভ্যুত্থান’ চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেসব উতরে ৩০ বছর ধরে দারিদ্র্যপীড়িত দেশটির ক্ষমতায় আসীন ছিলেন তিনি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn