সুনামগঞ্জের হাওরে কৃষকের পর জেলেদের সর্বনাশ
একে কুদরত পাশা-
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে পানিতে তলিয়ে থাকা ধানগাছ পচে গেছে। দূষিত হয়ে পড়ছে পানি। মরে ভেসে উঠছে মাছ। সোমবার অন্তত ১২টি হাওরপারের জেলে ও কৃষকেরা এ কথা জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়। এ সময় হাওরে বড় বড় ঢেউ হয়। এরপর থেকে হাওরের মাছ মরে ভেসে উঠতে থাকে। দিরাই উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর, বরাম হাওর, উধগল হাওর, চাপতির হাওর, জামালগঞ্জ উপজেলার হালির হাওর, তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওর, মহালিয়া হাওর, আঙ্গারুলি হাওর, সমসার হাওর, শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওর, বরাম হাওর, ধরমপাশা উপজেলার ধারাম হাওর ও সাসকার হাওরে মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
দিরাই উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের কুলঞ্জ গ্রামের কৃষক জুবের চৌধুরী জানান, কয়েকদিন আগে হাওর পানি ঢুকে এখন ধানপচে গন্ধসৃষ্টি হয়েছে। একটু বাতাস হলেই বাড়িতে টিকা মসকিল। আজ সকাল থেকে হাওর মাছ মরে ভেসে উঠছে। মানুষ ভাবছিলো ধানেরপর মাছ দিয়ে সংসার চলবে এখন আর হাওরের মানুষ চোখে রাস্তা দেখছেনা। উদগল হাওর পাড়ের রিপু জানান, রোধে পানি গরম হয়ে যাওয়ায় মাছ মরে যাচ্ছে। গ্রামের মানুষ নৌকা নিয়ে মরা মাছ ধরছে। ই মাছ খাওয়া যাইবো কিনা ইতাও আলাপ হচ্ছে।
আমরা হাওর বাসীর প্রধান সমন্বয়কারী রুহুল আমীন বলেন, বিভিন্ন হাওরপারের মানুষের কাছ থেকে মাছ মরার খবর আসছে। হাওরের মাছ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিগগির পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা হাউস এর নির্বাহী পরিচালক সারেহীন চৌধুরী শুভ বলেন, কাছাধান পচে যাওয়ায় এক ধরণের গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে তাই মাছ মরে ভেসে উঠছে। মৎস বিভাবকে এ বিষয়ে জরুরী ট্রদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, হাওরের পানির নিচে ব্যাপক পরিমাণে ধানগাছ পচে এমোনিয়া নামের একপ্রকার ক্ষতিকর গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে মাছ মরে যাচ্ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়াহিদুল আবরার বলেন, হাওরের পানির নিচে ধানগাছ পচে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ের সময় হাওরে ঢেউ ওঠে ও বাতাসে সেই গ্যাস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এই গ্যাসের প্রতিক্রিয়া এখন পুরো হাওরের পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় মাছ মরছে। গতকাল তাঁরা উপজেলার বিভিন্ন হাওর ও নদীর পানিতে এই গ্যাসের প্রতিষেধক ছিটিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, হাওরের পানিতে ভেসে ওঠা এসব মাছ খেলে মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না।