সুনামগঞ্জে আজাদের খুনিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
শহীদনুর আহমেদ, সুনামগঞ্জ :: ১৪ মার্চ রাতে দুর্বুত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আজাদ মিয়া। এর তিন দিন পর ১৮ মার্চ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান আজাদ। আজাদ মিয়া হত্যাকান্ডের ৩ মাস পার হলেও মামলায় এজহারভুক্ত মূল আসামীরা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। মামলার অন্যতম আসামি মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হক ১ মাসের জামিন নিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্ট থেকে। বাকি আসামীরা এখনও আত্মগোপনে রয়েছে। আজাদ মিয়ার খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহত আজাদের পরিবার ও বিভিন্ন হাওর আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
রবিবার দুপুরে আলফাত উদ্দিন স্কয়ারে এই দাবিতে মানববন্ধন করেছে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন সদর উপজেলা কমিটি। মানববন্ধনে উাপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক মানুষ। সদর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক চন্দন রায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহীদনুর আহমেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরানুল হক চৌধুরী, একে কুদরত পাশা, মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল আমীন, সদস্য সাবেক ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান, নিহত আজাদের ছোট ভাই আফরোজ রায়হান প্রমুখ।
বক্তারা এসময় বলেন, আজাদ মিয়া হাওর আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বিগত সময়ে দেখার হাওরে হওয়া অনিয়ম দুর্নীতি প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। তাই হাওর দুর্নীতিবাজ চক্র রাতে আঁধারে ভাড়াটে খুনি দ্বারা আজাদকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আন্দোলনকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আজাদ হত্যাকান্ডের ৩ মাস পার হয়ে গেল। অথচ মামলায় এজহারভুক্ত মূল আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আসামীরা আত্মগোপনে থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্যে আজাদের পরিবারকে হুমকিধুমকী দিয়ে আসছে।
বক্তরা বলেন, হত্যাকান্ডের মূল হোতা নুরুল হক মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ১ মাসে জামিন নিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হবে নুরুল হক। ন্যায় বিচার ও আজাদ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে নুরুল হককে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেয়ার দাবি জানান বক্তারা। এছাড়াও দ্রুত সময়ের মধ্যে এজহারভুক্ত আসামি পাভেল মিয়া ও রিপন মিয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানান তারা। নতুবা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্তয় করেন আন্দোলনকারীরা।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কবি ও সাহিত্যিক ইকবাল কাগজী, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অনিমেষ পাল ভানু, আনোয়ারুল হক, সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন, সোহেল মিয়া, সদস্য শরিফ মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা রাসেদ আলী, মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন কমিটির সহ সভাপতি জামাল উদ্দিন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা প্রহল্লাদ দাস, মনিউর উদ্দিন, জন সংযোগ সমম্পাদক শহীদুল ইসলাম রিপন, কোষাধ্যক্ষ রাজিব, ডা. সেলিম, ফকির প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আজাদ হত্যাকান্ডে ১৮ মার্চ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১২ জনকে আসামী করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন আজাদের বড় ভাই আজিজ মিয়া। পুলিশ ঐদিন এজহারভুক্ত আসামী উকিল আলীকে গ্রেফতার করে। পরে এই ঘটনায় হামলায় জরিত থাকার অভিযোগে শহরের আরফিন নহর এলাকার মাহবুব, শ্রাবনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই মামলায় এজহারভুক্ত আসামী পাভেল মিয়া ও রিপন মিয়া এখনও পলাতক রয়েছে।