সুনামগঞ্জে উদ্ধার হওয়ার পর যা বললেন সাংবাদিক মুশফিক
সুনামগঞ্জ:: বেসরকারি টেলিভিশন মোহনার সিনিয়র রিপোর্টার মুশফিকুর রহমানকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গবিন্দপুর এলাকায় পাওয়া গেছে। গত শনিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যার পর রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভোরে উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় একটি মসজিদের সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুনামগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিন্নাতুল ইসলাম। মোহনা টিভির জেলা প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাস জানান, মসজিদের সামনে মুশফিকুরকে পড়ে থাকতে দেখে মসজিদের ইমাম স্থানীয়দের খবর দেন। স্থানীয়রা পকেটে পরিচয়পত্র দেখে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসআই জিন্নাতুল জানান, কে বা কারা মুশফিকুরকে ওই মসজিদের সামনে ফেলে যায় তা জানা জায়নি। তখন তার জ্ঞান ছিল। তিনি মসজিদের লোকজনকে বলেন যে, তিনি খুবই ক্লান্ত। তখন তাকে খাবার-পানীয় দেওয়া হয়। তিনি সেখান থেকে মোবাইল ফোনে বাড়িতেও কথা বলেছেন। তার শার্ট-গেঞ্জি ছেঁড়া দেখা গেছে এবং মারধর করার কিছু আলামত পাওয়া গেছে। সেখান থেকে পুলিশ সাংবাদিক মুশফিককে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সাংবাদিক মুশফিক পুলিশকে জানান, ৩ আগস্ট বিকেলে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে বাড্ডায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ঘুরে এসে গুলশান এলাকায় এসে মোহাম্মদপুরের একটি বাসে উঠেন। এসময় মুশফিক অনুভব করেন তাঁর নাকে কি যেনো স্প্রে করা হয়। এরপর আর কিছুই মনে নেই তাঁর। জ্ঞান ফেরার পর সাংবাদিক মুশফিক দেখেন তাঁর চোখ বাঁধা। একটি মাইক্রোবাস করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাকে। আশেপাশে কয়েকটি লোক তাঁকে ঘিরে রেখেছে। লোকগুলো তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে আর মারধর করছে। আর কিছু মনে নাই তার। মঙ্গলবার ভোর রাতে মাইক্রোবাস থেকে বের করে পিছনে না তাকিয়ে দৌড়াতে বলে সন্ত্রাসীরা। দৌড়াতে দৌড়াতে একটি মসজিদের কাছে এসে এক মুসল্লীকে সব খুলে বলেন তিনি। মুশফিক বলেন, এক মাস পূর্বে অজ্ঞাত ঠিকানা থেকে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় পল্লাবী থানায় একটি জিডি করেন তিনি। সাংবাদিকতা ও ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর কোনো শত্রু নেই। তবে সম্প্রতি তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার চরবোয়ালী ফকিরবাড়ী চরবোয়ালী খন্দকার রাজীব আহমদ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে প্রতিপক্ষ এ বিষয়টি নিয়ে বিশৃংখলা করে আসছিল। এই বিষয়টি নিয়ে তাকে অপহরণ করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, মোহনা টেলেভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার এফএম মুশফিকুর রহমান নিখোঁজ হওয়ার পরে গুলশান থানায় একটি জিডি করা হয়। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুশফিক নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ফলাও করে প্রচার হতে থাকে।