সুনামগঞ্জ :: সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আগামীকাল মঙ্গলবার মঞ্চস্থ হবে নবশিখা নাট্যদল, সিলেট’র নাটক ‘কবর’। কালজয়ী নাট্যকার মুনির চৌধুরী রচিত ভাষা আন্দোলনের পটভূমি নিয়ে নির্মিত এ নাটকের এটি ১০তম প্রদর্শনী করবে দলটি। নবশিখা নাট্যদল ছাড়াও এ উৎসবে নাটক মঞ্চস্থ করবে বন্ধন থিয়েটার সুনামগঞ্জ ও দেশ নাট্যগোষ্ঠী শায়েস্তাগঞ্জ। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আয়োজিত জাতীয় নাট্য উৎসবের অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জে ৩ দিনব্যাপী নাট্য প্রদর্শনীর প্রথম দিন মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় নাটকটি মঞ্চায়ন করা হবে। নবশিখা নাট্যদলের পরিবেশনায় নাটকটির নির্দেশনায় রয়েছেন ফরিদুল ফারদিন, সার্বিক তত্ত্বাবধানে সুদীপ চক্রবর্তী। কবর নাটকের পটভূমি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। জেলে বসে এ নাটকটি লিখেন প্রখ্যাত নাট্যকার মুনীর চৌধুরী। এ নাটকে নেতা ও পুলিশ অফিসার চরিত্র তৎকালীন বাংলার শাসক ও শোষক শ্রেণীর আর মুর্দা ফকির চরিত্রটি প্রতিবাদী ও সাহসী চরিত্র। সে শহীদের লাশ দেখে বুঝতে পারে এ সাধারণ মৃত দেহ নয় কারণ লাশের গায়ে বারুদের গন্ধ। একই কবরে দাফন দিতে রাজি নয় সে। সে মৃত দেহগুলোকে পুনরায় উঠে এসে মিছিল করার আহবান জানায়। এতে মাতাল অবস্থায় নেতা ও পুলিশ ভীত হয়। লাশগুলো ছায়ামূর্তি হয়ে প্রতিবাদ করে তারা মৃত নয়, তারা এই কবরে যেতে চায় না। তারা বাঁচতে চায়। ইন্সপেক্টর হাফিজ মায়ের ছদ্মবেশে ছায়ামূর্তিগুলোকে ধোকা দিতে চেষ্টা করে। কিন্তু সে সফল হয় না ছায়ামূর্তিগুলো মুর্দা ফকিরের আহবানে পুনরায় মিছিলে যায়। নেতা অজ্ঞান অবস্থা থেকে জ্ঞান ফিরে দেখল সব কাজ শেষ। সে বুঝতে পারছে না এতো সময় যা ঘটল তা কি বাস্তব নাকি কল্পনা। নেতার অবচেতন মনের মানসিক বাস্তবিক মিথস্ক্রিয়ার প্রকাশই এ মঞ্চায়ন।

নির্দেশক ফরিদুল ফারদিন বলেন, মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকটিতে কাজ করে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। নবশিখা নাটদ্যলের সাথে কাজ করতে আমার অনেক ভালো লেগেছে। এ নাটকের কাহিনী ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে হলেও এখানে ফুটে উঠেছে তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থা ও শোষক শ্রেণীর প্রতিভূ। তৎকালীন রাজনীতির সাথে বর্তমান রাজনীতি ও নেতাদের মিল ফুটে উঠেছে। এখানে আরও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি মানুষের অবচেতন মনের মানসিক ও বাস্তবিক মিথস্ক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ। এখানে বাস্তবতার বিভ্রম সৃষ্টি করা হয়েছে। বিদ্রোহ প্রত্যেক্ষ ও বাস্তবরূপে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। নেতার অবেচতন মনের কল্পনায় বিদ্রোহ উপস্থাপিত হয়। সুবিচক্ষণ দর্শকদের দৃষ্টি ভঙ্গির উপর নির্ভর করে আমার সফলতা। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন- আব্দুর রাজ্জাক খান, রকিবুল হাসান রুমন, ধ্রুবজ্যোতি দে, শাহ শরীফ উদ্দিন, শাকিল আহমদ সোহাগ, রাজীব দাশ, শংকর দেবনাথ, তন্ময় নাথ তনু, এ.টি.এম. শামসুল হাসান বাবর, হাসান, তামজিদ, শরীফ-২,অর্ণব, নদী, এনামুল সাজ্জাদ, নাঈম, প্রান্ত, তন্ময় বণিক, হৃদয়, অলক, রাহেল, মাহাদী, লিয়ন, হায়দার, প্রিয়াংকা, মৌসুমী, নিপা, সিথী, সিমলা, সুমি, লিমা, সোনিয়া, রুহেনা খানম মুক্তা, তাহমিনা, সুমিতা, মুক্তা, সুমি, আনহার, অর্ণা, জয়, হেপি রাণী নাথ, সুমন, রোকসানা, নুপূর, শংকর, সন্দীপ, শতাব্দী, হাসিব, অর্জুন, অর্পা, কামরুল, অপূর্ব। নাতোকে সহকারী নির্দেশক হিসেবে আছেন ধ্রুবজ্যোতি দে। রূপসজ্জা সুমন রায়, শাকিল আহমদ সোহাগ প্রয়োজনা অধিকর্তা রকিবুল হাসান রুমন, আব্দুর রাজ্জাক খান। সহ-প্রযোজনা অধিকর্তা তন্ময় নাথ তনু, রাজীব দাশ। পোষাক পরিকল্পনা ফরিদুল ফারদিন, মৌসুমী চৌধুরী মৌ। আলোক পরিকল্পনা তৌফিক আজীম রবিন (প্রাঙ্গনেমোর, ঢাকা), হুমায়ুন করিব জুয়েল। আলোক নির্দেশনা ধ্রুবজ্যোতি দে। আলোক প্রক্ষেপণ বদরুল আলম।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn