সুনামগঞ্জে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান:৪টন কয়লা আটক
সুনামগঞ্জ:: তাহিরপুর সীমান্তে সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁর করা হচ্ছে কয়লা,চুনাপাথর ও গরুসহ মদ,গাঁজা,ইয়াবা ও হেরুইন। চোরাচালানীরা ভারতে থেকে পাচাঁরের সময় ৪ মেঃটন চোরাই কয়লা আটক করেছে বিজিবি।
এব্যাপারে বিজিবি ও এলাকাবাসী জানায়,প্রতিদিনে মতো ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভোর ৫টায় বিজিবি কর্তৃক দায়েরকৃত কয়লা চোরাচালান মামলা নং-১৩ এর আসামী,কয়লা চোরাচালান কমিটির সভাপতি লাকমা গ্রামের বাবুল মিয়া,তার ভাই আবুল মিয়া,একাধিক চাঁদাবাজি ও মদ পাচাঁর মামলার জেলখাটা আসামী লালঘাট গ্রামের কালাম মিয়া,মানিক মিয়া ও চাঁদাবাজি মামলা নং-জিআর ১৬৩/০৭ইং এর জেলখাটা আসামী চিহ্নিত চোরাচালানী ও ইয়াবা ব্যবসায়ী দুধের আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া গং বালিয়াঘাট সীমান্তের ১১৯৭ পিলারের পূর্বদিকে লালঘাট এলাকার চোরাই গুহা দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও ৫ হাজার ফুট চুনা-সাদা পাথর পাচাঁর করে লালঘাট গ্রামের মোতালিব মিয়ার ছেলে চিহ্নিত চোরাচালানী মানিক মিয়ার বাড়িতে নিয়ে মজুদ করে। এই খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার রাশেদ খান অভিযান চালিয়ে ৪ মেঃটন (৫৫বস্তা) কয়লা আটক করেন। কিন্তু বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার কেরামত আলীর নেতৃত্বে ঐ এলাকায় বিজিবি সদস্যরা টহলে থাকলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে টেকেরঘাট ও বড়ছড়া শুল্কষ্টেশনের ব্যবসায়ী আরিফ আহমেদ,নাসির উদ্দিন,কফিল উদ্দিন,তারা মিয়া,সবুজ মিয়াসহ আরো অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি মামলার আসামী কালাম মিয়া,জিয়াউর রহমান জিয়া,বাবুল মিয়া,আব্দুল হাকিম ভান্ডারী,ইদ্রিস আলী,তিতু মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাক তারা নিজেদেরকে বিজিবি,পুলিশের সোর্স আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভারত থেকে ওপেন চুনাপাথর ও কয়লাসহ মদ,গাঁজা,ইয়াবা,হেরুইন ও গরু পাচাঁর করে এবং পাচাঁরকৃত ১ বস্তা কয়লা থেকে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার কেরামতের নামে ২০টাকা,ক্যাম্পের মেস(খাওয়া-দাওয়া) খরছ বাবদ ৫০টাকা,তাহিরপুর থানার নামে ৫০টাকা,টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের নামে ৩০টাকা ও বিভাগ,জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে আব্দুর রাজ্জাক নিচ্ছে ৫০টাকা।
এছাড়াও সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের নাম ভাঙ্গিয়ে ৫০টাকা চাঁদা নেওয়াসহ এই সীমান্তের লাকমাছড়া ও টেকেরঘাট ছড়া দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে শতশত ট্রলি দিয়ে মরা পাথর,বল্ডার পাথর ও নুড়ি,সিংগেল পাথর আনার জন্য বিজিবি,পুলিশ ও সাংবাদিকদের নামে প্রতি ট্রলি থেকে ৩৫০টাকা ও প্রতি ট্রলি চুনাপাথর পাচাঁরের জন্য ৫৫০টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে। উপরের উল্লেখিত বিভিন্ন চোরাচালান মামলার আসামীদের মধ্যে জিয়াউর রহমান জিয়া,কালাম মিয়া,বাবুল মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাক ওপেন চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে নিজনিজ এলাকায় নির্মাণ করেছে বিলাস বহুলবাড়ি,একাধিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান,কিনেছে একাধিক দামী মোটর সাইকেল,জায়গা-জমি,একাধিক ব্যাংক একাউন্ট ও বীমা। তাদের নেতৃত্বে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে চুরাই কয়লা ও চুনাপাথরের চোরাই ঘাটগুলো লিজ দেওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর রবিবার বিজিবি কর্তৃক দায়েরকৃত কয়লা চোরাচালান মামলা নং-১৩ থেকে কয়লা চোরাচালান কমিটির সভাপতি বাবুল মিয়াকে রক্ষা করার জন্য এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিপুলকে আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে ৩০হাজার টাকা উৎকোচ দেওয়া হয়েছে। চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার পরও আজ পর্যন্ত আইনগত ভাবে জোড়ালো কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে সীমান্ত চোরাচালান দিনদিন বেড়েই চলেছে। এব্যাপারে জানতে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সরকারী মোবাইল নাম্বারে কল করার পর ক্যাম্প কমান্ডার কেরামত আলী ফোন রিসিভ করেন এবং সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথে তিনি লাইন কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন। সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক নাসির উদ্দিন বলেন,সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে এবং থাকবে।