সুনামগঞ্জ কোর্টে আইনজীবী-পুলিশ-মোয়াক্কেল হাতাহাতি:মামলা দায়ের
বুধবার দিনভর উত্তেজনা ছিল আদালতপাড়ায়। আইনজীবী-মোয়াক্কেল, গোয়েন্দা পুলিশের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আইনজীবীকে মারধরের ঘটনায় সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে এক মোয়াক্কেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় কোন আইনজীবী আসামি পক্ষের সহায়তা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ছাতক উপজেলার কুমারকান্দা গ্রামের মো. শানুর উদ্দিন আদালত পাড়ায় আসেন একটি মামলার কাজে। এসময় দ্রুত গতিতে তিনি জেলা জজ আদালতের দিকে ছুটছিলেন। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বারের সিনিয়র আইনজীবী মল্লিক মঈন উদ্দিন সোহেলের সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। তিনি ছিটকে পড়েন এবং তার মোবাইল সেটটিও রাস্তায় পড়ে যায়। একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে এভাবে ফেলে হনহন করে চলে যাওয়ার পরও কোন বিনয় দেখাননি ওই ব্যক্তি। এসময় তিনি ওই ব্যক্তিকে ধমক দিলে উগ্র প্রকৃতির ওই ব্যক্তি উল্টো তাকে ধমক দেন। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তি যুগ্ম জেলা জজ শেখ রাজিয়া সুলতানার আদালতের এজলাসে ঢুকে ছাতা নিয়ে কয়েকজন আইনজীবীর উপর চড়াও হন। এসময় অন্যান্য আইনজীবী ও কোর্ট পুলিশ এগিয়ে এসে তাকে ধরে কোর্ট হাজতে নিয়ে যায়। বিকেলে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম এনাম বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে দ্রুতবিচার আইনে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনার পরে আদালত চত্বরে পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট খায়রুল কবির রোমেনের চেম্বারের জুনিয়র মু. জুয়েল মিয়ার সঙ্গে ডিএসবির এসআই (সিভিল ড্রেস পরিহিত) রওশনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় আরো কয়েকজন গোয়েন্দা পুলিশ ও অ্যাডভোকেট মুখোমুখি হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সিনিয়র আইনজীবীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিকেলে আইনজীবী-পুলিশ বসে বিষয়টি আপোসে নিষ্পত্তি করেন। এদিকে দুপুরে আদালত চত্বরে আরেক সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে অপর এক মোয়াক্কেলেরও বাকবিতন্ডা হয় বলে জানা গেছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হক বলেন, উগ্র প্রকৃতির এক ব্যক্তি আমাদের সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেও ক্ষমা না চেয়ে তাদের উপর চড়াও হয়। তাদের লাঞ্ছিত করতে উদ্যত হয় সে। পরে আইনজীবী ও কোর্ট পুলিশ মিলে তাকে ধরে কোর্ট হাজতে নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে দ্রুতবিচার আইনে মামলা হয়েছে এবং মামলায় কোন আইনজীবী ওই আসামির পক্ষে আদালতে দাঁড়াবেননা বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ডিএসবির ওসি (ডিআইও-১) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের এক গোয়েন্দা অফিসারের সঙ্গে এক আইনজীবীর কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি পরবর্তীতে নিষ্পত্তি হয়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ড. খায়রুল কবির রোমেন বলেন, আদালত পাড়ায় কয়েকটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। একটি ঘটনায় আদালতে দ্রুতবিচার আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। সদর থানার ওসি মো. শহীদুল্লাহ বলেন, আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনায় দ্রুতবিচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে।