বার্তা ডেক্সঃঃ জানুয়ারী’র ১৬ তারিখ সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন। মাত্র বাকী ১৮দিন। কাউন্সিলর পদে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিভিন্ন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেও মেয়র পদে লড়ছেন মাত্র দুইজন। নৌকা ও ধানের শীষের দুই দলের দুইজন প্রার্থী মাত্র মনোনয় পত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের দিন বুঝা যাবে মেয়র পদে নির্বাচন হচ্ছে কি না। নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র নাদের বখত হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় প্রথম থেকে সবাই ধরে নিয়েছেন তিনিই জয়ী হচ্ছেন।  পৌরসভার নির্বাচনে পৌরবাসীর চোখ এখন আর মেয়র পদের দিকে নয় । শুধু কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের দিকে। পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে পৌরবাসীদের মধ্যে সে কারনে কোন উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও  নির্বাচনের কোন আমেজ পাওয়া যাচ্ছে না।

দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি ছাড়া এবার আর মাঠে কেউ নেই। গেল দুইবার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্র‍য়াত মেয়র মমিনুল মউজদিনের পরিবার থেকে তার অনুজ গনিউল সালাদিন শক্ত প্রতীদ্ধন্দ্বী ছিলেন। নির্বাচনে এবার তিনি প্রার্থী হননি। প্রয়াত মেয়র মমিনুল মউজদিনের পরিরার তথা ঐতিহ্যবাহী মরমী কবি হাছন রাজার পরিবার থেকে প্রার্থী না থাকায় আগ থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে মেয়র নির্বাচন হবে রসকষহীন কিংবা প্রতীদ্ধন্দ্বীতাহীন।

বিগত কয়েকটি মেয়র নির্বাচনের বিএনপি দলীয় প্রার্থীদের সূচনীয় ভরা ডুবির অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপি দলীয় ভাবে খুব দূর্বল। এবারের নির্বাচনে তাদের প্রার্থী শুন্যতা আবার মনে করিয়েদেয় দলের অসহাত্বের কথা। বিগত সময়ে যারা মেয়র নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী ছিলেন এবারের নির্বাচনে তাদেরকে দলীয় মনোনয়ন দেবার আশ্বাস দিলেও তারা কেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সম্মত হননি।

অতীত অভিজ্ঞতায় তারা দেখেছেন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করলেও দলের নেতাকর্মীরা পরে আর দলের পক্ষে থাকেন না। দলীয় প্রার্থী জয়ী হতে পারবেন না এ বিবেচনায় দলের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী অথবা পছন্দের প্রার্থীর পক্ষ হয়ে দলের বিপক্ষে চলে যান।

বিএনপি এবারের নির্বাচনে প্রার্থী শুন্যতায় ভুগেছে। শেষ মূহুর্তে দলের অস্তিত্ব বিবেচনায় নামকা ওয়াস্তে দলের প্রার্থী হিসাবে একজনের নাম ঘোষনা করা হয়। সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির অনেকে মনে করেন, দলের এই করুন অবস্থায় এবার মেয়র নির্বাচনে দল প্রার্থীতা ঘোষনা না করলেও পারতো। আবার দলের অনেকে মনে করেন জয় পরাজয় বড় নয়। কৌশলগত কারনে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা উচিত। কোন নির্বাচন বিনা চ্যালেঞ্জে ছাড় দেয়া হবে না যেহেতু দলের স্বীদ্বান্ত তাই নির্বাচনে বাধ্য হয়ে অংশ গ্রহন করতেই হয়।

 অপরদিকে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের সাংগঠনিক দূর্বলা প্রকাশ হয়। জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা এটা ভালো ভাবে জানেন তারা পরাজয় জেনেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। পৌরবাসীদের অনেকে মনে করছেন বিএনপি লোক দেখানোর মেয়র নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা মনে করেছেন, নৌকার প্রার্থী নাদের বখতের তুলনায় বিএনপির প্রার্থী খুব দূর্বল। দূর্বল প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া তাদের কৌশল হতে পারে। নির্বাচনকে হয়তো প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে তাদের মূল উদ্দেশ্য। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নয়। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তারা মনে করেন, ভরাডুবি নিশ্চিত জেনে নির্বাচনের দিন ১২টার পর অতীতের মতো হয়তো বিএনপি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারে। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে ধোঁয়া তুলতে পারে। ২৯ শে ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র প্রত্যারের শেষ দিন। বিএনপি মনোনয় পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্বাচন থেকে সরে যায় কি না সেটাও অনেকে আশংকা করছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn