স্পোর্টস আবায়া’ পরে রাস্তায় সৌদি নারীরা
সাধারণত কালো রঙের বোরকাই সৌদি আরবে প্রচলিত। কিন্তু সম্প্রতি রঙিন, ভিন্ন ধরনের এক আবায়া বা বোরকা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সৌদি নারীদের মাঝে। একে বলা হচ্ছে ‘স্পোর্টস আবায়া’। সৌদি গ্যাজেটের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গত মাসে সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে নারী ক্রীড়াবিদ বোরকার এই নতুন ভার্সন পরে জগিং করছেন- এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়েছিল। বোরকাটির ডিজাইনার ইমান জোহার্জি নিজেই স্থানীয়ভাবে এইসব বোরকার জনপ্রিয়তা দেখে বিস্মিত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি জানান, এই বোরকার এখন বিশাল চাহিদা। বিভিন্ন রঙের এই স্পোর্টস বোরকা পরাকে সৌদি নারীদের ক্ষমতায়নের অন্য একটি প্রতীক বলে তিনি অভিহিত করেন। জোহার্জির এই পোশাক পরিহিত এক নারী এএফপিকে বলেন, ‘শাড়ি যেমন ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ, তেমনই আবায়াও আমাদের সংস্কৃতির অংশ। অন্যদিকে, সৃষ্টিকর্তা যদি চাইত নারীরা খেলাধুলা করবে না, তাহলে আমাদেরকে পেশী, এমনকি শরীরও দেওয়া হতো না। আমি কী পরছি, তা নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার কারো নেই।’ এতদিন সৌদি আরবে বোরকা মানেই ছিল কালো রঙের পোশাক। ৪৩ বছর বয়স্ক এই ডিজাইনার সৌদি ফ্যাশনের সে ধারাকে ভেঙেছেন। তিনি মূলত নিজের জন্যই প্রথম এই স্পোর্টস বোরকা ডিজাইন করেন। এরপর তা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। জিপারযুক্ত জাম্পস্যুটের মতো দেখতে এই স্পোর্টস বোরকা নারীদের সারা শরীর ঢেকে রাখলেও পরতে বেশ আরামদায়ক এবং এটি পরে কোনোরকম অসুবিধা ছাড়াই নড়াচড়া করা যায়। এই স্পোর্টস বোরকার সঙ্গে মাথায় স্কার্ফ ও তার ওপর বেসবল ক্যাপ পরে অনেক সৌদি নারী নতুন ধরনের ফ্যাশন ট্রেন্ড চালু করেছেন।
সৌদি আবহাওয়ায় খাপ খাওয়ানোর জন্য পোশাকটি হালকা সবুজ ও সাদা রঙে তৈরি হচ্ছে। পোশাকটির উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ফ্রেঞ্চ পপলিনের মতো প্রাকৃতিক তন্তু, যার কারণে এটা পরে ঘামলেও তা শরীরের সঙ্গে লেগে থাকে না। এই স্পোর্টস বোরকার সর্বশেষ স্টাইলটি স্থানীয় ফুটবল ক্লাবগুলোর থিমের সঙ্গে মিলিয়ে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সৌদি নারীরাও তাদের পছন্দের ফুটবল ক্লাবকে সমর্থন জানাতে পারছেন। জনপ্রিয় এ বোরকা নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। প্রচলিত কালো বোরকার পরিবর্তে এই স্পোর্টস বোরকাকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এমনকি এই পোশাক পরিধান করা নারীদের দেখতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মতো লাগছে বলেও মন্তব্য করা হয় এক টুইটে।