বার্তা ডেস্ক :: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় স্বামীর পরকীয়া প্রেম ও নির্যাতন সইতে না পেরে তাসলিমা খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত তাসলিমা খাতুন উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী লিখন মিয়ার স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার পর পুলিশকে না জানিয়ে তাসলিমার মৃতদেহ দাফনের চেষ্টা করেন তার স্বজনরা। মৃত্যুর ২১ ঘন্টা পর শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে সংবাদ পেয়ে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ধুনট উপজেলার গোপালনগর গ্রামের লিখন মিয়া প্রায় ৬ বছর আগে শেরপুর উপজেলার বরইতলী গ্রামের তাসলিমা খাতুনকে বিয়ে করে। লিখন মিয়া সৌদি আরবে চাকরি করতেন। কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে দুই মাস আগে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন লিখন। এ অবস্থায় প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে লিখনের পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি টের পান তাসলিমা।

এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাসলিমাকে তার স্বামী নির্যাতন করে। স্বামীর পরকীয়া প্রেম ও নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীর ঘরেই বিষপান করে তাসলিমা। তাকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা তাসলিমাকে শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলেন।

বগুড়া নেয়ার পথে ধুনট-শেরপুর সড়কের শালফা এলাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাসলিমা মারা যায়। এরপর বরইতলী গ্রামের বাবার বাড়িতে তাসলিমার মরদেহ নেয়া হয়। সেখানে লিখনের পরিবারের সাথে দেনদরবার করে ৫ লাখ টাকা তাসলিমার বাবাকে এবং ৪ বিঘা জমি তাসলিমার দুই ছেলের নামে লিখে দেওয়ার শর্তে মিমাংসা করে তাসলিমার মৃতদেহ দাফনের সিদ্ধান্ত হয়।

এ বিষয়ে লিখন মিয়া বলেন, পারিবারিক অশান্তির কারণে তাসলিমা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৫ লাখ টাকা ও ৪ বিঘা জমি লিখে দেওয়ার কথা হয়েছে।

ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক রিপন কুমার বলেন, বিষক্রিয়ায় অসুস্থ তাসলিমাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনেন তার স্বজনরা। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবণতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, তাসলিমার আত্মহত্যার বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জানানো হয়নি। তবে সংবাদ পেয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, এ বিষয়টি উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়নি। তারপরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।- জাগো নিউজ

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn