সৎ এবং সাহসীরা মরে গেলে পৃথিবী নিঃস্ব হয়ে যাবে: তসলিমা
কলকাতা মেডিকেলে অনিকেত চট্টোপাধ্যায়সহ ছয়জন ছাত্র অনশন ধর্মঘট করছেন। সাত দিন পার হয়ে গেছে, কেউ কিছু খাননি। জল স্পর্শও করেননি। ওদের দাবি, মেডিকেলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য হোস্টেল গড়ে দিতে হবে। অনশনের কারণে অনিকেত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দেখে মনে পড়ছে ববি স্যান্ডসের কথা। ববি স্যান্ডস আইরিশ রিপাব্লিক্যান আর্মি। আই আর এর সদস্য ছিলেন। সংসদ সদস্যও ছিলেন। আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখার অপরাধে জেল হয় তার, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের জেলখানায় যখন ছিলেন, অনশন ধর্মঘট করেছিলেন। তার দাবিগুলো ছিল এ রকম- রাজনৈতিক বন্দিদের কয়েদির পোশাক না পরার অধিকার চাই, জেলখানার শ্রম না করার অধিকার চাই, শিক্ষামূলক আর বিনোদনমূলক কাজের জন্য অন্য কয়েদিদের সঙ্গে মেলামেশা করার অধিকার চাই, সপ্তাহে একটি ভিজিট, একটি চিঠি, একটি পার্সেল পাওয়ার অধিকার চাই। ববি স্যান্ডস ১৯৮১ সালের মার্চে অনশন শুরু করেন, ৬৬ দিন না খেয়ে থেকে তার মৃত্যু হয় ওই বছরেরই মে মাসে। শুধু তারই নয়, তার সঙ্গে অনশন করা আরও ৯ জন সংগ্রামী আই আর এ সদস্যেরও মৃত্যু হয়। ববি স্যান্ডসরা জেলের ভেতর অনশন করেছিলেন, তাদের অনশন ভাঙাবার কেউ ছিল না। মার্গারেট থ্যাচার ডাইনিপনা না করে ওদের দাবি যদি মেনে নিতেন, অতগুলো সংগ্রামী যুবককে সেদিন মরতে হতো না। পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেন অনিকেত এবং তার সহযোদ্ধাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে তাদের অনশন ধর্মঘটের সমাপ্তি ঘটান। সৎ, সাহসী আর সংগ্রামী মানুষরা মরে গেলে এই পৃথিবী নিঃস্ব হয়ে যাবে। এত ক্ষতি আমরা মেনে নেব না।