বৃষ্টির পানি আর পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বল বোরো ধান। তাই হাওরের পারে পারে  আজ বিষাদের ছায়া।যে পানিতে নৌকা বাইতে বাইতে হাওরপুত্ররা গলা ছেড়ে ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালি গান ধরত, সেই পানিই আজ তাদের কাছে অভিশাপ।আজ আর হাওরের টলমল জলে কোনো চন্দ্রালোক নেই, আছে অন্ধকারের অমানিষা।হাজার হাজার ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে পূর্ণিমা চাঁদ ঝলসানো রুটির মতোই লোভনীয়।কিন্তু সেই রুটি কেনার টাকাও তাদের কাছে নেই।নিমিষেই এমনই সর্বস্বান্ত আর নিঃস্ব হয়ে পড়েছে হাওর পারের হাজারো কৃষক পরিবার।

দেশের হাওর অধ্যুষিত এলাকা কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও নেত্রকোনা অঞ্চলের হাওরগুলোতে চৈত্র মাসের অকাল বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে একরের পর একর বোরো ধানের জমি তলিয়ে যাওয়ার কারণে এমনই দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।এতে করে ওইসব অঞ্চলের সাধারণ কৃষকেরা চোখে সর্ষে ফুল দেখছে। চোখের সামনে সন্তানের মতো করে বড় করে তোলা ফসল ডুবে যেতে দেখে তারা এখন পাগলপ্রায়।

কৃষকেরা জানিয়েছেন, এই একটি মাত্র ফসলেই তাদের আয়-ব্যয়ের একমাত্র উৎস। এই বোরো ধান বিক্রি করেই তারা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, হাট-বাজার এমনকি তেল-নুন কিনে থাকেন।শুধু তাই নয় অনেক কৃষক কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমন কথাও জানিয়েছেন, মেয়েটির বিয়ের কাবিন পড়িয়ে রাখা হয়েছে, ফসল তোলার পর স্বামীর ঘরে তুলে দেওয়া হবে।সেই বিয়ের উৎসবও ফসল ডুবে যাওয়ার কারণে সম্ভব হবে না।গবাদি পশুগুলোকে খাদ্যের অভাবে পানির দামে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।কিন্তু বিশ হাজার টাকার গরু পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি করতে গিয়েও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ হাওর পারে এখন আর ধনী-গরিব বলে কিছু নেই।সবারই সমান আকাল দেখা দিয়েছে।

তবে মানুষের এই দুর্দশাকে পুঁজি করে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা রাতারাতি চাল, আটা ও ময়দার মতো ভোজ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।দুদিন আগেও যেখানে মোটা চালের বস্তা প্রতি দাম ছিলো আটারশো টাকা, সেই চালের দাম রাতারাতি এখন চব্বিশো থেকে সাতাইশো টাকা।

আটার দাম যেখানে ছিলো আট থেকে নয়শ টাকা বস্তা। সেই আটার বস্তা এখন বার থেকে তেরশ টাকা দিয়ে কৃষককে কিনতে হচ্ছে।কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আমাদের এই সর্বনাশের দিনে কতিপয় ব্যবসায়ী কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে ফুরফুরে মেজাজে আছেন।

পাহাড়ি ঢল আর উপর্যুপরি বৃষ্টির কারণে বোরো ফসল তলিয়ে গেলেও এটাকে শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে মনে করছেন না কৃষক ও স্থানীয় সচেতন মহল।তাদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণেই এই দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে।তাই হাওর পারে এই মহাদুর্যোগ যতটা না প্রাকৃতিক কারণে হয়েছে তার থেকে বেশি দায় দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষের।হাওর অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প ও টেন্ডারের মাধ্যমে হয়ে থাকে।এই বাঁধ নির্মাণকাজ ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখের মধ্যে শেষ করার কথা ছিলো।কিন্তু কোনো ঠিকাদারই সঠিক সময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেনি।

এর মধ্যে অনেক হাওরে প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বররা কিছু কাজ করলেও ঠিকাদাররা এক উড়া মাটি না ফেলেই টেন্ডারের কোটি কোটি টাকা হরিলুট করেছে।তাই ইতোমধ্যেই এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের বিচার চেয়ে হাওর অঞ্চলের ভুক্তভোগী মানুষ সভা সমাবেশ করেছে, করছে।গত ৫ এপ্রিল সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে বলেছেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের যেসকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, ঠিকাদার আর পিআইসির দুর্নীতির কারণে মানুষ ফসল ঘরে তুলতে পারে নাই, সেইসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হোক।যাতে জড়িতদের বিরূদ্ধে কঠোর আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়।এসময় তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, এই তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ফসলরক্ষা বাঁধের কোনো বিল দেওয়া যাবে না, দিতে দেওয়া হবে না।

দেশের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় হাওরের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরমধ্যে দেখার হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, মাটিয়ান হাওর, গোরমার হাওর, চন্দ্রসোনার তাল, নলুয়া, করচার হাওর, শনির হাওর ও বড়মার হাওর উল্লেখযোগ্য।এসব হাওরের পাড়ে ধর্মপাশা, তাহেরপুর, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দিরাই ও শাল্লা উপজেলা অবস্থিত। ইতোমধ্যে সরকারি হিসেব মতে জানা গেছে, এসব অঞ্চলে এক লাখ এক হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।তবে কৃষকের দাবি এর পরিমাণ আরও অনেক বেশি। সুনামগঞ্জ জেলার ২৮ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় আশি ভাগ মানুষ এই ফসলের উপর নির্ভরশীল। এ ফসল ফলানোর জন্য কৃষককে ঋণ করতে হয়। বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে ফসল তুলে কৃষক এই ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু গতবছরও অর্ধেক ফসল পানিতে খেয়ে ফেলায় কৃষক এবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

ধর্মপাশা উপজেলার আবিদনগর গ্রামের কৃষক মৈনুদ্দিন বলেন, ‘আড়াই লাখ টাকা খরচ করে ২০ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি।সবটুকু ফসলই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চারজন কামলা (কাজের লোক) রেখেছিলাম, তাদের প্রত্যেককে ৪০ মণ করে ধান দিতে হবে। কিন্তু এখন দেওলিয়া হয়ে গেছি। আমার আর কিছুই করার নেই।’

সুনামগঞ্জ অঞ্চলে সাত হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে বর্গাচাষের প্রচলন রয়েছে।ফসল তলিয়ে যাওয়ার কারণে এই বর্গা চাষিরা আরও বেশি বিপদে পড়েছেন।এমনই একজন বর্গাচাষি তাহেরপুর উপজেলার লামাগাঁও গ্রামের আবুল কালাম।তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারে আটজন সদস্য। এর মধ্যে এক মেয়ে কলেজে পড়ে, আরেক মেয়ে প্রাইমারি স্কুলে।’ তিনি অসহায়ভাবে বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের পড়াবো কি, ভাত-ই তো খেতে পারবো না। হঠাৎ করেই সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আটারোশ টাকা বস্তার চাল চব্বিশো টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।’

সাংবাদিক মাসুম হেলাল বলেন, ‘হাওর রক্ষার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বড় ধরনের বরাদ্দ এলেও কোনো কাজ করা হয়নি। ঠিকাদাররা নেতাদের সঙ্গে লবিং করে সব টাকা মেরে দিয়েছে। যার জন্যই আজ হাওর পাড়ের কৃষকদের এই দুরবস্থা।’
এদিকে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম, মিটামইন ও ইটনা উপজেলায় ছোট-বড় বেশ কয়েকটি হাওর রয়েছে।এসব হাওরের ৬৮ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ২৩ হাজার হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে প্রায় একশ গ্রামের এক থেকে দেড় লাখ মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুদ্দিন বলেন, ‘এখানে বিজয় বেড়িবাঁধ নামে একটি বাঁধ আছে। এটি ২০০৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। বরাদ্ধ এসেছে তবে এগুলো লুটপাট করা হয়েছে। বাঁধের জন্য কোনো কাজ করা হয়নি।ফলে কৃষক আজ এই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।’ ইটনা উপজেলার বলদার হাওর পাড়ের কৃষক সায়ন দে বলেন, ‘জিয়লের হাওরের বাঁধ ভেঙে গেছে। যার ফলে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়েছে।এখন বাঁধটি নিজেদের চেষ্টায় মাটি, চাটাই দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা চলছে।’

নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুড়ি উপজেলায় দুটি হাওর রয়েছে।প্রথমটির নাম ডিঙ্গাপোতা ও দ্বিতীয়টি বড় হাওর নামে পরিচিত।খালিয়াজুড়ির বড় হাওর পারের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, কীর্তনখোলা বাঁধ ভেঙে ১৭ হাজার হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।এখানকার মানুষ এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছে।আরেকটি খালিয়াজুড়ি বাঁধ রক্ষার জন্য প্রায় চারহাজার মানুষ দিনরাত কাজ করছে। এই বাঁধ রক্ষার জন্য শুধু খালিয়াজুড়ি গ্রামের মানুষ নয় পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা উপজেলা থেকেও মানুষ এসেছে।এই বাঁধটি ভেঙে গেলে প্রায় ৯৫ হাজার হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে যাবে।তিনি বলেন, ‘সরকারের ১০ টাকা কেজি চালের কর্মসূচি খালিয়জুড়িতে গণহারে করা উচিত, না হলে মানুষ না খেয়ে মরবে।’
খালিয়াজুড়ি নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অজিত বরণ সরকার বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের সময় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটার জন্য এটি ভেঙে যায়।কারণ নিয়ম অনুযায়ী ত্রিশ ফুট দূরত্ব থেকে মাটি কাটার কথা থাকলেও যারা টেন্ডার নেয় তারা এটা মানে না।ফলে বাঁধের কাছাকাছি গর্ত তৈরি হওয়ায় একটু পানি জমলেই বাঁধ ভেঙে যায়।’

চাঁদ সওদাগরের ডিঙ্গা এখানে এসে তলিয়ে গিয়েছিলো বলেই হাওরটির নাম ডিঙ্গাপোঁতা হাওর।এটা স্থানীয়দের বিশ্বাস। সেই ডিঙ্গাপোতা হাওর পারের মানুষের মাঝেও হাহাকার আর আর্তনাদ। জীবন ধারণের উপায় একমাত্র ফসলটি হারিয়ে তারা দিশেহারা। এই হাওর পারের কৃষক আব্দুল মন্নাফ বলেন, ‘পনেরো কাটা জমি করেছিলাম তার সবটাই তলিয়ে গেছে। এখন কিভাবে সংসার চলবে তা একমাত্র আল্লাই জানে।’ তার দুই ছেলে এক মেয়ে। এক ছেলে কলেজে পড়ে আরেক ছেলে স্কুলে। মেয়েটি ছোট।তিনি বলেন, ‘এবার বোধহয় ছেলেদের পড়ালেখা করানোই সম্ভব হবে না। ভাত-ই তো পাব না। ছেলেদের পড়াব কিভাবে?’

বড়াম গ্রামের আরেক কৃষক রিপন মিঞা বলেন, ‘কর্মসংস্থান ও জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ১৫৫ কাটা জমি করেছি। সবটুকুই পানিতে তলিয়ে গেছে।’ এখন কি করবেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘এখন বিক্রমপুর না হলে গার্মেন্টসে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই।’

ডিঙ্গাপোঁতা হাওর পাড়ের বাসিন্দা অধ্যাপক পুতুল রঞ্জন রায় বিশ্বাস বলেন, ‘কিছু মানুষের হরিলুটের কারণে আজ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।গ্রামের মানুষের এখন যে অবস্থা, এই অবস্থা আমি ৭১ সালেও দেখি নাই।হাওরের মানুষের এই অবস্থা বরাবরই থাকে।কিন্তু এবারের মতো অবস্থা আর কোনোদিন হয়নি।কেউ ঘরে একমুঠো ধান তুলতে পারবে না।’

আদর্শনগর বাজারের ধান ব্যবসায়ী রঞ্জিত সরকার বলেন, হাওরের সব জমি তলিয়ে যাওয়ার কারণে এবার আর আমাদের কোনো ব্যবসাও হবে না। মানুষের ঘরে একমুঠো ধানও উঠবে না। ব্যবসা হবে কিভাবে? তিনি আরও বলেন, এই দুরবস্থার মধ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চাল-আটার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।এতে করে মানুষ আরও দুর্ভোগে পড়েছে।

এ বিষয়ে সোয়াইর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম তালুকদার বলেন, ‘ডিঙ্গাপোতার লক্ষ লক্ষ মণ ধান পানির নিচে।কারও ঘরে ভাত নেই। ডিঙ্গাপোতার সব কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ‘তিনি আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আশা, ব্রাক, গ্রামীণ ও পল্লীবন্ধু নামের চারটি ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের চার ইউনিয়নের ম্যানেজারদের ডেকে বলেছি- যারা নিজ ইচ্ছায় ঋণ দিতে আসবে তাদের কাছ থেকেই ঋণ নিবেন। কোনো কৃষকের কাছ থেকে চাপ দিয়ে ঋণ টাকা নেওয়া যাবে না।’

এমনই নিদারুণ অবস্থা হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের হাওর অঞ্চলের কৃষকদেরও। ঐ দুই উপজেলাতেও অসংখ্য কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।সেইসঙ্গে এখন তারা অসাধু ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পড়ে আরও জেরবার।
হাকালুকি হাওর পাড়ের কৃষক গফফার, আইয়ুব, মাখন, ইসরাব আলী, হাজী চলিমুল্লা বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অন্যের জমি চাষ করেছিলাম, কিন্তু সব ধান পানির নিছে তলিয়ে গেছে। এখন আবার চালের বাজারে আগুন। পরিবার কিভাবে চালাব চিন্তা করে কূল-কিনারা পাচ্ছি না।’ কৃষাণি জয়তুন বিবি বলেন, ‘বোরো ফসল দিয়ে আমাদের সংসার ও ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতাম। কিন্তু এখন কিভাবে বাচ্চাদের মুখে ভাত দিব ভেবে পাচ্ছি না।’
এদিকে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার জাইলা হাওর পাড়ের বাসিন্দা জাহের মিঞা জানান, সব ফসল পানির নিচে। এখন বাড়ি বেচা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ৫০ হাজার টাকার মতো তার ঋণ আছে। এই ঋণ পরিশোধের চিন্তায় তিনি দিশেহারা।’ কৃষকের এই সর্বনাশের জন্য সচেতন মহল যাদের দায়ী করছেন, সেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকতাদের বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

(প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার ্ও হবিগঞ্জের প্রতিনিধিরা)

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn