পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, জলাভূমি হাওরে আর কোনো সড়ক নির্মাণ হবে না। তবে উড়াল সড়ক হবে, যেটির কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এই উড়াল সড়কের মধ্য দিয়ে আমাদের হাওরের জীবনমান উন্নত হবে,কৃষক ভাইয়েরা উপকৃত হবেন, আমরা হাওর কেটে সড়ক নির্মাণ করে হাওরের প্রকৃতি পরিবেশের ক্ষতি করতে চাই না। বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার আস্তামা সংলগ্ন ডেকার হাওরে এই ধান কাটার মধ্য দিয়ে এবছরের ধান কাটা উৎসবের উদ্বোধন শেষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এম এ মান্নান বলেন, দেশ এবং দেশের মানুষের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফুরন্ত ভালোবাসা রয়েছে। বিশেষ করে হাওরের মানুষকে তিনি খুব ভালোবাসেন। আমাকে ব্যক্তিগতভাবে হাওরের মানুষের কথা জিজ্ঞেস করেন। তিনি এদেশের মানুষকে অনেক কিছু দিয়েছেন। টিউবওয়েল, কমিউনিটি ক্লিনিক, ব্রিজ-কালভার্ট দিয়েছেন। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননত্রী শেখ হাসিনা। দেশের প্রতিটি এলাকায় সুন্দর সুন্দর স্কুল নির্মাণ করে দিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। নিজ সাহসে দেশের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন তিনি। এ জন্য তাকেই আমাদের বেশি দরকার। সবাই বলে, শেখ হাসিনার সরকার, বার বার দরকার।
হাওর উন্নয়ন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, হাওরের প্রতি শেখ হাসিনার দরদ বেশি। তিনি সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, উড়ালসড়কসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছেন এবং করবেন। আমার মাধ্যমে যে কাজগুলো হয়েছে, শেখ হাসিনা না থাকলে সুনামগঞ্জে একটি ইটও লাগাতে পারতাম না।
কৃষি বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জে উন্নত মানের অনেক ধান উৎপাদন হয়। মাঝে মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমরা মনে করি কৃষিই আমাদের মূল চালিকা শক্তি। তাই, সোনার এ ফসল রক্ষার জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করি। হাওরে বাঁধ দেই। খাল খনন করি। ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত আমাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ থাকে। প্রতি বছর এ ফসল রক্ষায় সরকার শত শত কোটি টাকা ফসর রক্ষা বাঁধের জন্য বরাদ্দ দিচ্ছে। যা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। সরকার সম্মানিত কৃষক ভাইদের সহযোগিতায় কৃষিতে বিপ্লব করতে চায়। এ জন্য বিশাল অঙ্কের টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের সার দিচ্ছে, কম্বাইন হারভেস্টার, চাষাবাদের জন্য অন্যান্য মেশিনারিজ দিচ্ছে। এতে যদিও সরকারের বিশাল অঙ্কের টাকা ভর্তুকি যাচ্ছে, তাতে লাভবান হচ্ছেন আমার দেশের কৃষক ভাইয়েরাই। কৃষরা লাভবান হলে দেশ লাভবান হবে। সুনামগঞ্জের প্রতি, বাংলাদেশের প্রতি শেখ হাসিনার গভীর মমত্ববোধ আছে। তিনি দেশকে যেমন ভালোবাসেন, দেশের মানুষকেও সমান ভালোবাসেন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মুহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে, সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ছকিনা আক্তারের যৌথ পরিচালনায় বোরোধান কর্তন উৎসবের উদ্বোধন পরবর্তী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুল হক মিসবাহ।
অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, বাংলাদেশ কৃষকলীগের সহ-সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, কৃষি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সাজ্জাদ ও জেলা পুলিশ সুপার এহসান শাহ প্রমুখ। এ সময় শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাধারণ কৃষকবৃন্দ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, ওলামালীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১১৪ বার