হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের দাবী ত্রাণ–সহায়তা বাড়াতে হবে
সুনামগঞ্জে হাওরের ফসলহারা কৃষকদের জন্য ত্রাণ-সহায়তা বাড়ানো এবং বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা। গতকাল শনিবার তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরপাড়ের পাঁচটি গ্রামের ফসলহারা কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও ত্রাণ বিতরণকালে এই দাবি জানান তাঁরা। দুপুরে হাওরপাড়ের রামজীবনপুর গ্রামের মাঠে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার ফসলহারা কৃষকেরা এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে আছেন। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। অনেকেই কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়েছেন। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ক্ষতিগ্রস্ত সব কৃষক সহায়তা পাবেন। কিন্তু এখনো অর্ধেকের বেশি কৃষক সরকারি সহায়তার বাইরে আছেন।
বক্তারা আরও বলেন, জেলায় সরকারি হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সোয়া তিন লাখ কৃষক। কিন্তু প্রতি মাসে সরকারের ত্রাণ-সহায়তা হিসাবে দেড় লাখ কৃষককে ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এই সহায়তা বিতরণেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া জেলায় সরকারের খোলাবাজারে কম দামে চাল বিক্রি বন্ধ হয়ে পড়ায় ২২ হাজার লোক বিপাকে পড়েছেন। প্রতিদিন এই লোকজন ৭৫ টাকায় পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারতেন। অবিলম্বে খোলাবাজারে চাল বিক্রি আবার চালু এবং ক্ষতিগ্রস্ত সব কৃষক-পরিবারকে ত্রাণ-সহায়তার আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।
সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম আখঞ্জি, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সদস্য মালেক হোসেন পীর, বিকাশ রঞ্জন চৌধুরী, সুখেন্দু সেন, রুহুল আমিন, মাসুম হেলাল, গোলাম সরোয়ার, সালেহীন চৌধুরী, মো. রাজু আহমেদ, প্রদীপ পাল, মোখলেছুর রহমান প্রমুখ। পরে সংগঠনের উদ্যোগে যুক্ত্যরাজ্যপ্রবাসী মো. মাসুক মিয়ার পক্ষ থেকে এলাকার ২০০ কৃষককে এক লাখ টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়।
সুনামগঞ্জে এ বছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। গত ২৭ মার্চ থেকে শুরু হয় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল। এরপর একে একে তলিয়ে যায় জেলার সব হাওরের কাঁচা ধান। জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে এবার ১৫৪টি হাওরে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬১২ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০ কৃষক-পরিবার।