হাওয়া ভবন-তারেক রহমানের নাম ছেড়ে আল্লাহর নাম নিন
কথায় কথায় তারেক রহমান ও হাওয়া ভবনের সমালোচনা না করে আল্লাহর নাম নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘যতবার হাওয়া ভবন আর তারেক রহমানের নাম নেয়া হচ্ছে তার থেকে আল্লাহর নাম নিলে বেহেশত যাওয়ার একটা ব্যবস্থা হত।’ রবিবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপি নেতা এ কথা বলেন। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০১৬ সালের এই দিন তারেক রহমানকে গ্রেপ্তারের স্মরণে এই আলোচনার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক দল। দিনটিকে তারেক রহমানের কারাবন্দি দিবস হিসেবে পালন করে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠন। ওই সরকারের আমলেই ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। এরপর আদালত একাধিকবার সমন জারি করলেও তিনি দেশে ফেরেননি। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে আনা একটি দুর্নীতি মামলার বিচার শেষ হয়েছে। অর্থপাচারের ওই মামলায় তার সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে আপিল বিভাগ। তবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকার ১০ বছরেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ করতে পারেনি।’
শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে বড় ব্যবসায়ীদেরকে দুই জায়গায় ঘুষ দিতে হতো। ঘুষের একটি অংশ যেতো প্রধানমন্ত্রীর জন্য এবং আরেকটি যেতো তার ছেলে তারেক রহমানের জন্য।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাগের টাকা যেত বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালুর কাছে আর তারেক রহমানের ভাগ যেতো তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের কাছে। এই বক্তব্যের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, তারেক রহমান যখন বিএনপির বড় পদে ছিলেন না। কিন্তু তখন থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা, বুদ্ধিজীবীসহ সবাই তার পেছনে লেগেছিল। তিনি বলেন, ‘কেন তারা পেছনে লেগেছিল শুরুতে অনেকে না বুঝলেও এখন সবকিছু পরিষ্কার। কারণ তারেক রহমানের মধ্যে যে সাংগঠনিক প্রতিভা ছিলো, আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এই কারণে তার পেছনে লেগেছিল তারা।’
‘ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিলো’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন নজরুল। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার মনে করে না যে তারা জনগণের সমর্থনে ক্ষমতায় এসেছে। সে কারণে তারা মনে করে অন্যরাও এমন করে ক্ষমতায় আসে।’ নজরুল বলেন, ‘গত গল্প শুনলাম, তিস্তার পানি না পেলে ভারতকে ট্রানজিট দেয়া হবে না। অথচ এখন তো রাস্তায় ভিন্ন ভাষায় লেখা নম্বর প্লেটের গাড়ি দেখি। জিয়াউর রহমান দক্ষিণ তালপট্টিতে ভারতকে পতাকা তুলতে দেননি। সমুদ্র চুক্তির নামে সেই তালপট্টি আমাদের হাত ছাড়া হয়ে গেছে। সমুদ্র জয়ের পর সরকার বলছে, তারা জয়ী হয়েছে। অথচ মিয়ানমারও আনন্দ করছে যে তারা জিতেছে। তাহলে জিতলো কে?’।
বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায় এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের নামে প্রহসন ও খেলায় অংশ নিতে চাই না। যে নির্বাচনে সবাই অংশ নিতে পারবে, নির্বিঘ্নে সবাই ভোট দিতে পারবে। কিন্তু এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সেখানে সরকারি কর্মকর্তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আজীজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, ইয়াসিন আলী, লিটন মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল।