হিজড়াদের চাঁদাবাজি ও অসামাজিক কার্যক্রমে অতিষ্ট এলাকাবাসী
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লাখ লাখ টাকা তারা চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ উঠে। দীর্ঘ দিন থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে এ এলাকায় এসে তারা চাঁদাবাজি করছে। তাদের (হিজড়া) এ অত্যাচার দেখেও কেউ যেন না দেখার ভান করছেন। হিজড়াদের প্রধান টার্গেট হলো বিয়ে বাড়ি। বিয়ে বাড়িতে দল বেধে গিয়ে অবস্থান বুজে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে তারা। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওরা শরীর থেকে জামা-কাপড় খুলে অশোভন আচরণ করে এবং নানা অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। পরে মানসম্মানের ভয়ে ওদের চাহিদা পুরন করে বিদায় করতে হয়।
জানা যায়, কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন আনাচে-কানাছে আছে তাদের বিচরণ। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তাদের এজেন্টও আছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। ওই এজেন্টরা এলাকার কোনো বিয়ে, জন্ম ও বিবাহ বার্ষিকীতে তাদের খোঁজ দিয়ে থাকেন। সময় মত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হানা দেন তারা। এ ছাড়া বিভিন্ন হাট-বাজারে একেক দিন একক গ্রুপ গিয়ে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করছে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে অপমান করে তারা। তাই সম্মান বাঁচাতে বাধ্য হয়েই চাঁদা দেন সাধারণ মানুষ। কমলনগর উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজারের অদুরে হিজড়ারা দলবদ্ধভাবে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। দিনের বেলায় চাঁদাবাজি করলেও রাতে ওই বাসায় তারা বিভিন্ন অপকর্মের লিপ্ত থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার তোরাবগঞ্জ বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, হাটের দিনসহ প্রায় এসে হিজড়ারা টাকা তোলেন। টাকা না দিতে চাইলে বিভিন্ন গালমন্দসহ মারধরও করেন ব্যবসায়ীদেরকে। ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই ব্যবসায়ি আরো বলেন, কোন দেশে বাস করি জানিনা তবে যেন মগের মুল্লুক চলছে। হাজিরহাট বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ও ইউপি সদস্য হাজী বাহার উদ্দিন জানান, কমলনগরে হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে একশ্রেণির ভদ্র লোকগুলো নিরবে সহ্য করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া হাজিরহাট বাজারের অদুরে তাদের বাসা। ওই বাসায় রাতে নারী কেলেংকারিসহ অসংখ্য অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কমলনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আসলে হিজড়াদের উৎপাতে সব জায়গার মানুষ অতিষ্ট। সরকার এদের পূর্নবাসনের জন্য কাজ করছে। তবে এদের সঙ্গে বেশি কথা বলা যায় না। তারপরও চেষ্টা করতেছি দেখি কি করা যায়। হিজড়াদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে প্রশাসনের আশু দৃষ্টি কামনা করছেন সচেতন মহল।