বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া ৩ দিন বয়সী শিশুটি উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জ থেকে শিশুটি উদ্ধার করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে শিশুটিকে মায়ের কোলে হস্তান্তর করা হয়। বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে শিশুটি চুরি যাওয়ার পর মা হোসনে আরা বার বার কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। চুরি হওয়ার পর খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তিনি। কিন্ত শিশুটি উদ্ধারের খবর পেয়ে তার চোখে মুখে হাসি ফুটে উঠে। শিশুটিকে যখন হস্তান্তর করা হয় তখন মা হেসে উঠে শিশুকে আদর করতে থাকেন। মায়ের কোলে শিশু ফিরে এসেছে এমন খবরে হাসপাতালে রোগী, নার্স, ডাক্তার সবাই ছুটে আসে শিশুটিকে এক নজর দেখার জন্য।

আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনাতন চক্রবর্তী, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিধান চন্দ্র মজুমদার, ডা. সামির হোসেন মিশু, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ও উদ্ধারকারী সাব ইন্সপেক্টর খোকন কুণ্ডু ও বগুড়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) আসলাম আলী। উদ্ধারের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনাতন চক্রবর্তী জানান, শিশু চুরির পর পুলিশ উদ্ধারে নেমে পরে। রোববার বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান তাকে জানান, হাসপাতালের কর্মচারী রমজান আলী একটি শিশুর তথ্য পেয়েছে। ঘটনাটি জানার পর ধুনট থানার সাব ইন্সপেক্টর খোকন কুণ্ডুকে শিশুটি উদ্ধারের দায়িত্ব দেন। তিনি আরো জানান, কৌশলগত কারণে অপহরণকারীর বিষয়ে প্রাথমিক অবস্থায় গুরুত্ব না দিয়ে শিশুটি উদ্ধারের জন্য কাজ করা হয়েছে। তবে, বগুড়া শহরের বারপুর এলাকার মাহফুজারের স্ত্রী অপহরণকারী রত্নাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।

বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক খোকন কুণ্ডু জানান, খবর পেয়ে রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার ঢেকুরিয়া বাজারে গিয়ে বকুল নামের এক দোকানদারকে খুজে বের করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, বগুড়ার গাবতলী থানার মাঝবাড়ি গ্রামের ফুলমিয়ার স্ত্রী নিঃসন্তান লাবনী শনিবারে ঢেকুরিয়ায় তার বাবার বাড়িতে একটি নবজাতক শিশু নিয়ে এসেছিল। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবজাতককে নিয়ে বগুড়ার মাজবাড়িতে চলে গিয়েছে। পরে মাজবাড়িতে এসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নজরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ফুল মিয়ার বাড়িতে গেলে দেখা যায় শিশুটিকে বিছানায় রেখে তারা পালিয়ে গেছে। পরে শিশুটিকে বিকেল ৩টায় উদ্ধার করে বগুড়ায় নিয়ে আসি। হাসপাতালে থাকা শিশুটির মা হোসেনে আরা জানান, আমি খুশি হয়েছি। আমার ছেলে শিশুটি আমার কোলে ফিরে পেয়ে আমি ধন্য। এজন্য পুলিশ ভাইদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn