গত জানুয়ারিতে হঠাৎ করেই ফিফা ঘোষণা করে ৩২ দলের পরিবর্তে ২০২৬ বিশ্বকাপ হবে ৪৮ দলের। ফিফার এই ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে সমালোচনা। কেউ এর মধ্যে ফিফার ভোটিং রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। কেউ প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বকাপের মান নিয়ে। কেউ বলছেন স্রেফ বাড়তি টাকা আয়ের জন্যই বিশ্বকাপের দলের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা। অভিযোগটা মিথ্যে নয়। বিশ্বকাপে বেশি দল মানেই বেশি ম্যাচ, বেশি টিকিট বিক্রি, টিভি সত্ব থেকে বাড়তি আয়ের হাতছানি। বিশ্বকাপের মান নিয়ে প্রশ্নটাও প্রাসঙ্গিক। ৪৮ দলের বিশ্বকাপ হলে স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল দলগুলোও অনায়াসেই জায়গা করে নেবে। তবে পেছনের এ সব সমালোচনায় কান না দিয়ে ফিফা বরং নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথেই হাঁটছে। সেই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ফিফা ঘোষণা করেছে ৪৮ দলের বিশ্বকাপে কোন অঞ্চল থেকে কয়টি করে দল চূড়ান্তপর্বে জায়গা পাবে, তার একটা প্রাথমিক খসড়া।

প্রাথমিক সেই খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে ইউরোপ থেকে মোট ১৬টি দল বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলবে। বাকি ৩২ দলের মধ্যে আফ্রিকা থেকে ৯টি, এশিয়া থেকে ৮টি, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ৬টি, কনকাকাফ অঞ্চল (উত্তর আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল) থেকে ৬টি, ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে ১টি ও বাকি দুটি দল নির্ধারিত হবে ৬ দলের প্লে-অফ থেকে। প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপের স্বাগতিক দল যে মহাদেশের হবে, সেই মহাদেশ থেকে একটি দল কম উঠবে। ৬ দলের প্লে-অফ টুর্নামেন্টটা হবে বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশেই, ২০২৫ সালের নভেম্বরে। প্লে-অফ টুর্নামেন্টের ৬টি দল হবে ইউরোপ বাদে বাকি পাঁচ অঞ্চলের পাঁচটি এবং স্বাগতিক দল যে অঞ্চল থেকে হবে, সেই অঞ্চল থেকে বাড়তি একটি দল।

বর্তমানের ৩২ দলের ফরম্যাটে ইউরোপ থেকে ১৩টি, আফ্রিকা থেকে ৫টি, এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ৪টি করে এবং ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে ৩টি দল সরাসরি চূড়ান্তপর্বে জায়গা পায়। বাকি দুটি দল নির্ধারিত হয় প্লে-অফে। সেই প্লে-অফ হয় এশিয়া-দক্ষিণ আমেরিকা ও কনকাকাফ-ওশেনিয়া অঞ্চলের মধ্যে।

ফিফার এই খসড়ায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ইউরোপ। কারণ, তাদের বাড়ছে মাত্র ৩টি দল। অন্যদিকে আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে বাড়ছে ৪টি করে দল। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ২টি, কনকাকাফ থেকে বাড়ছে ৩টি দল। আফ্রিকা থেকে ৯টি দেশ বিশ্বকাপে যাওয়া মানে কঙ্গো, বরকিনা ফাসোর মতো দলও জায়গা করে নেবে বিশ্বকাপে। ফিফার বর্তমান র‌্যাংকিংয়ে আফ্রিকার সেরা নয়ে যে কঙ্গো এবং বুরকিনা ফাসোও আছে। তেমনি র‌্যাংকিংয়ে এশিয়ার শীর্ষ ৮-এ আছে উজবেকিস্তানের মতো দলও। কনকাকাফ অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপের দরজা খুলে যাবে পানামা, হাইতির মতো দলের! আগামী মে মাসে বাহরাইনে অনুষ্ঠিত হবে ফিফা কাউন্সিল। সেখানেই এই প্রস্তাবটি পেশ করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে ফিফা কাউন্সিলে প্রস্তাবটি পাশও হয়ে যেতে পারে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn