৫ বছর পর জানা গেল আসামি নয়, ধর্ষণ করেছেন সাক্ষী
মামলায় অভিযোগ করা হয়, অভিযোগকারী দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে পড়াশোনা শেষে ২০১৫ সালে ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টায় প্রকৃতির সাড়া দিতে বাইরে বের হলে খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা তার মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এরপর বাদী ঘুম থেকে উঠে তার মেয়ের রুমে গিয়ে মেয়েকে না দেখে বাহিরে খোঁজ করতে গিয়ে মেয়ের জুতা ও ওড়না খুজে পান। এরপর খোঁজাখুঁজি করে তিনি সুপারি বাগান থেকে তার মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ এ মামলার সাক্ষী এমাদুল হককে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলার এজাহারে চার নম্বর সাক্ষী ছিল এমাদুল হক। কিন্তু এ তদন্ত প্রত্যাখ্যান করে বাদী পুনরায় তদন্তের আবেদন করলে ইমাদুল থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুনরায় চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয় খালাস পাওয়া মহসিন ও মোয়াজ্জেম। আদালত সূত্রে জানা যায়, মূলত ওই গৃহবধূর মেয়েকে ধর্ষণ করেন এ মামলার চার নম্বর সাক্ষী এমাদুল। এরপর পূর্বশত্রুতার জেরে তিনি এ ধর্ষণের অভিযোগ চাপিয়ে দেন তার প্রতিপক্ষ মহসিন ও মোয়াজ্জেমের কাঁধে। আর নির্দোষ দুই অভিযুক্তকে ফাঁসাতে তিনি সহায়তা করেন ওই গৃহবধূকে।
পরে মামলার বাদী আদালতে অভিযোগ করেন, এ মামলার সাক্ষী এমাদুল তার কন্যাকে ধর্ষণ করে। এরপর এ ধর্ষণের অভিযোগ তার প্রতিপক্ষ মহসিন ও মোয়াজ্জেমের কাঁধে তুলে দিতে নানা রকম ভয় দেখায়। তাই তিনি নিরুপায় হয়ে মহসিন ও মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। ঘটনা জানাজানির পর এ মামলায় সাক্ষী এমাদুল আটমাস কারাভোগও করেন। পরে আদালত বাদী ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য পযার্লোচনা করে এমাদুল হককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ বিষয়ে আসামীর আইনজীবী আসাদুজ্জামান বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপীল করবো। এখন পর্যন্ত রায়ের কপি আমরা পাইনি। রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি একটি জঘন্যতম ঘটনা। এমাদুল হক ওই সময় ইউপি সদস্য ও আমাদের এডভোকেট ক্লার্ক ছিল। প্রতিবেশীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকার কারণে একটি স্কুল পড়ুয়া নাবালিকা মেয়েকে নিজে ধর্ষণ করে অন্যদের বিরুদ্ধে বাদীকে বাধ্য করে মিথ্যা মামলা করায়। এই জঘন্যতম ঘটনায় এমাদুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য ছিল।-পূর্বপশ্চিমবিডি