হাজার হাজার অ্যাকাউন্ট ‘ব্যান’ করল ফেসবুক, কী কারণে জেনে নিন
সোশ্যাল নেটওয়ার্কে গুজব রটানোর মতো সহজ কাজ কিছুই নেই। ক্রমাগত জীবিত ব্যক্তির মৃত্যুসংবাদ থেকে শুরু করে আজগুবি জানোয়ারের উপদ্রব, ভুল রাজনৈতিক খবর থেকে শুরু করে ভিনগ্রহীদের মর্ত্যে আগমন— ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টা ধরে উৎপাদিত ও প্রচারিত হয়ে চলেছে ভুয়ো খবর বা সংক্ষেপে গুজব। এই গুজব থেকে সোশ্যাল মিডিয়াকে বাঁচাতে এক কড়া পদক্ষেপ নিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ব্রিটেনে গুজব তথা ভুয়ো খবরের প্রাবল্য ঠেকাতে ফেসবুকের তরফে অনুসন্ধান চালিয়ে অসংখ্য ফেক অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করা হয়েছে সম্প্রতি। এই চিহ্নিতকরণের কাজটি সম্পন্ন হয়েছে এই সব অ্যাকাউন্টের অ্যাক্টিভিটি বিচার করে। বার বার একই পোস্টের অবতারণা, কমেন্ট বক্সে একই মেসেজ বার বার প্রদান— এগুলিই নাকি জাল অ্যাকাউন্ট চেনাতে সাহায্য করেছে তদন্তকারীদের। চিহ্নিত জাল অ্যাকাউন্টগুলিকে রিমুভ করার ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের একটি খ্যাতনামা গণমাধ্যম। ‘স্প্যাম’ আর ভিত্তিহীন সংবাদ সঞ্চারণ থেকে ফেসবুককে বাঁচাতে এই কাজ না করে উপায় ছিল না বলে জানানো হয়েছে ফেসবুকের তরফে। ব্রিটেনে ফেসবুকের ডিরেক্টর অফ পলিসি সাইমন মিলনার জানিয়েছেন, মানুষ যেমন ফেসবুকে সঠিক তথ্য দেখতে চান, তেমনটা আমরাও চাই। তাই এই কড়া পদক্ষেপ।
ভুয়ো ও জাল খবর তথা গুজব বন্ধ করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এক নতুন নীতি গ্রহণ করতে চলেছে বলে জানিয়েছেন মিলনার। তাঁরা এই সমস্ত গুজবের শিকড়ে পৌঁছে তাকে উপড়ে ফেলতে চান, এ কথাও বলেছেন তিনি। গুগল-এর সহযোগিতায় ফেসবুক একটি ‘তথ্য যাচাই’ কার্যক্রম গ্রহণ করবে। কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে দেশের প্রধান কিছু সংবাদ মাধ্যেমের নিউজরুম। তৃতীয় কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ সম্ভব নয়, মনে করেন মিলনার। তাই এই সংবাদ মাধ্যমগুলির অন্তর্ভুক্তি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময়ে ‘ফেক নিউজ’-এর যে প্রবাহ চলেছিল, তার সমীক্ষা থেকেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। মিলনার দেখিয়েছেন, হ্যাকাররা কী ভাবে অন্যের ইমেল অ্যাকাউন্ট থেকে বহু তথ্য চুরি করে। সেখান থেকেই তৈরি হয় এই সব জাল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। এই সব ফেক অ্যাকউন্ট থেকেই পেজ তৈরি করে, বা ক্রমাগত পোস্ট করে, অন্যের পোস্টে কমেন্ট করে ক্রাউড টানা হয়। তবে মিলনার এ কথা স্বীকার করেছেন যে, ২০১৬-র নির্বাচনে জাল অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা খুবই সামান্য। অসংখ্য ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইক-পোস্ট-কমেন্ট-শেয়ার হয়ে চলেছে। সেগুলিকে চিহ্নিত করাই এখন কর্তব্য, জানিয়েছেন ফেসবুকের ডিরেক্টর অফ পলিসি সাইমন মিলনার।