তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান আবার ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। অভূতপূর্ব ক্ষমতা ভোগ করেও তার সাধ মিটছে না। এক গণভোটের মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্ট পদকে আরও শক্তিশালী করে ক্ষমতার ভিত্তি আরও মজবুত করতে চাইছেন। সেই গণভোটে হারের ঝুঁকি কমাতে তিনি জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা তুর্কি নাগরিকদের সমর্থন আদায় করতে চান। তাই সেসব দেশে মন্ত্রীদের প্রচারের কাজে পাঠাতে চেয়েছিলেন কিন্তু জার্মানিতে সম্প্রতি একাধিক প্রচার সভা বাতিল হওয়ায় চরম ক্ষোভে ফুঁসছেন এর্দোয়ান। তবে জার্মানির বিরুদ্ধে তার বিষেদগার যে মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে, তেমনটা কেউ ভাবেনি। মূলত নিরাপত্তার কারণেই জার্মানির একাধিক পৌর কর্তৃপক্ষ এমন প্রচার সভা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রোববার এর্দোয়ান জার্মানির বর্তমান অবস্থার সঙ্গে নাৎসি জমানার তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম, জার্মানিতে নাৎসি জমানা শেষ হয়ে গেছে কিন্তু সেটা এখনো চলছে। প্ররোচনার সুর আরও জোরালো করে এর্দোয়ান চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘চাইলে আগামীকালই জার্মানি যেতে পারি। আমাকে প্রবেশ করতে না দিলে বা কথা বলতে না দিলে বিদ্রোহ করব।

বলা বাহুল্য, এমন মন্তব্যের ফলে জার্মানিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতারা এর্দোয়ানের বক্তব্যের নিন্দা করছেন। অনেকে বলছেন, এমন বেফাঁস মন্তব্য করে এর্দোয়ান নাৎসি জমানার ভয়াবহ ইতিহাস লঘু করে দেখাচ্ছেন। তাছাড়া তার নিজের একাধিক নীতি ও পদক্ষেপের মধ্যে একনায়কতন্ত্রের প্রতি তাঁর মোহ ফুটে উঠছে। সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদের কণ্ঠ কার্যত বন্ধ করে দিতে তার প্রশাসন একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে।

জার্মানির সরকার অবশ্য প্ররোচনার ফাঁদ সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছে। কিছু মহলে জার্মানিতে এর্দোয়ানের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার যে দাবি শোনা যাচ্ছে, বিচারমন্ত্রী হাইকো মাস তার বিরোধিতা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল চলতি সপ্তাহেই তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনিও মনে করেন, দুই দেশের মৈত্রীর ভিত্তি নষ্ট হতে দেওয়া চলে না।

উল্লেখ্য, আসন্ন গণভোটের প্রচারের ক্ষেত্রে তুরস্কের জন্য জার্মানির গুরুত্ব অপরিসীম কারণ সে দেশে প্রায় ১৪ লাখ ভোটাধিকারপ্রাপ্ত তুর্কি নাগরিক রয়েছেন। গত নির্বাচনে তাদের একটা বড় অংশ এর্দোয়ানের প্রতি সমর্থন দেখিয়েছেন।

সূত্র: ডয়েচে ভ্যালে

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn