ইসির সংলাপে ১২টি প্রস্তাব দেবে আওয়ামী লীগ
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংলাপে অংশ নিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার, অভিন্ন পোস্টারসহ ১২টি নির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে এখন থেকেই ভিতরে ভিতরে কাজ শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রেরণ করলে এ প্রস্তাবের সংখ্যা কম বা বেশি হতে পারে। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা সার্বজনীন করাই ইসির এমন উদ্যোগ। আগামী ৩০ জুলাই থেকে এই বৈঠক শুরু হবে। অবশ্য আগের নির্বাচন কমিশনগুলো এ ধরনের সংলাপ করেছিল।
সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শুরুর দেরি হলে কী প্রস্তাব দেওয়া হবে তা নিয়ে ভিতরে ভিতরে কাজ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। এ কাজটি করছে মূলত আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত হলে তা দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানোর পর পরবর্তীতে প্রস্তাবের বিষয় কম বা বেশি হতে পারে।
দলীয় সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশনের কাছে আওয়ামী লীগ এবার ১২টি নির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবে। এর মধ্যে অন্যতম থাকবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ই-ভোটিং প্রবর্তন করা। অভিন্ন পোস্টারের একটি প্রস্তাব দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনই এ পোস্টার ছাপানো এবং লাগানোর কাজ করবে। নির্বাচনী এলাকায় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় জনসভার আয়োজন করা হবে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থী উপস্থিত থাকবেন এবং নামের আদ্যাক্ষরে বক্তৃতা করবেন। এ জনসভা একাধিকবার হতে পারে।
সূত্রটি জানিয়েছে, প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হতে পারে— প্রার্থীদের জামানত ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা, নির্বাচন কমিশন থেকে প্রার্থীদের নির্দিষ্ট একটি টোকেন মানি সরবরাহ করা।এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমরা সংলাপে বসে ই-ভোটিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানাব। তবে করতেই হবে এমন চাপ প্রয়োগ করা হবে না। এ ছাড়াও আমরা চাই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ নির্বাচন করতে যা যা করা দরকার সেসব উদ্যোগ নিতে নির্বাচন কমিশনকে লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হবে।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে কিছু বিধিবিধান পরিবর্তন, পরিমার্জনসহ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার প্রস্তাব দেবে। এটা করলে নির্বাচন অনেক স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয়। এর আগে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ ১১ দফা দাবি পেশ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে। সেখানে নির্বাচনকালীন প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত এবং নির্বাচনকালীন সরকারের কর্মপরিধি কেবল আবশ্যকীয় দৈনন্দিন কার্যাবলির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কথা বলা হয়।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।