পীর হাবিবুর রহমান।।

ঢাকার বাইরে গেলে আমি বুক ভরে শ্বাস নেই, মনে হয় কোনো অচল নগরীর বন্দিত্ব থেকে মুক্তির স্বাদ নিলাম, হাওর-নদী, কবিতা-প্রেম, গান-আড্ডা ও বৃষ্টির শহর সুনামগঞ্জ এলে তো কথাই নেই। মায়ের স্মৃতিময় আঁচলে বাঁধা, বোনের স্নেহছায়া ঘেরা সুরমার দুপাড়ে কুলবধূদের লাজুক মুখের ছবি আঁকা, কত বালিকার বাঁকা চাহনি মনেপড়া আর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ঘরে ফেরার সুখের এই শহরে এলেই যেন নিজেকেও চেনা যায়। এক সময় কত চেনা সারি পুকুর ও গাছগাছালি ঘেরা সারি বাড়ি, কত প্রিয় আপনজনকে নিয়ে আত্মার বাঁধনে জড়ানো ধুলোমাখা স্মৃতির শহর ছিল ছবির মতোন।   অনেক বদলে গেছে এখন। রাজনীতি হারিয়েছে পুরনো গৌরব।

৫ মার্চ ভোর ৫টার বিমানে উড়ে সিলেটে নেমে বন্ধু বকুলকে নিয়ে সুনামগঞ্জ শহরে আসতে আসতে শীতের বাতাস গায়ে মাখতে মাখতে সাতসকালে বাড়ির বারান্দায় এসে বসতে না বসতেই প্রাণ আকুল করা কোকিলের সে কি বিরতিহীন ডাকে মুগ্ধ হলাম। সারা রাত জাগা মানুষ লম্বা ঘুম দিয়ে সন্ধ্যার পর সেনা শাসনবিরোধী স্বজন ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আড্ডায় বসলাম। সুজনের আতিথেয়তায় রাত ৩টা পর্যন্ত তাদের পুকুরঘাটে এই আড্ডা চলল। ২৬ বিঘা জমির ওপর গাছগাছালি ঘেরা এই বাড়িতে জোছনা রাতে আড্ডা বেশি উপভোগ্য হয়। আড্ডা থেকেই জানলাম সুনামগঞ্জ-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাসভবনে হামলা হয়েছে। শহরের নানা আড্ডায় এ নিয়ে সরগরম আলোচনা। সংসদ সদস্য রতন সংসদে এ নিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথাও বলেছেন রবিবার। বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাসীরা প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে এই হামলা করেছে এবং পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করায় স্থানীয় প্রশাসনকে তিনি ধন্যবাদ জানান। সুনামগঞ্জের বর্তমান জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের সততা দক্ষতা সংস্কৃতিমনা হৃদয় ও গণমুখী চরিত্রের কারণে মানুষের কাছে প্রশংসিত। দুজনই আগামীতে বদলি হয়ে যাবেন। স্থানীয় মানুষের প্রত্যাশা এরকম সৎ দক্ষ ও গণমুখী কর্মকর্তা যেন তাদের স্থলাভিষিক্ত হন। যাক, সংসদ সদস্য রতনের সংসদ বক্তৃতায় অভিযোগের তীর স্বাধীনতাবিরোধীদের দিকে ছুড়লেও তিনি যাদের আসামি করেছেন তারা সবাই সরকারদলীয় যুবসংগঠনের পদবিধারী কর্মী হিসেবে পরিচিত। শহরের আড্ডায় আড্ডায় আলোচিত হচ্ছে সংসদ সদস্য রতনের বাসার কেয়ারটেকার হামলার জন্য যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সেখানে অনেক প্রকৃত অপরাধীর নাম যেমন আসেনি তেমনি নির্দোষ ব্যক্তিও মামলার শিকার হয়েছেন। ভদ্র বিনয়ী আসাদুজ্জামান সেন্টুর নাম দেখে শহরের মানুষ বিস্মিত। সবার বক্তব্য সেন্টু হামলা করেনি। তবে সংসদ সদস্য রতন হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তার কিছু সত্যতা মিলছে সব মহলের আলোচনায়। বলাবলি হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনামগঞ্জ জেলার বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চলের কৃষকের সঙ্গে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতিবছর ফসল রক্ষায় হাওর রক্ষা বাঁধের জন্য ব্যাপক বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে শুরু করে, কর্মকর্তা, ঠিকাদার সিন্ডিকেট আর কিছু ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বার বরাদ্দকৃত অর্থ নামমাত্র কাজ করে বা কোথাও কাজ না করেই ভাগাভাগি করে নিয়ে যান। গেল বছর আবাদকৃত প্রায় দুই লাখ হেক্টর বোরো জমির ৮০ ভাগই অকাল বন্যায় তলিয়ে যায়। এই বাঁধ রক্ষার বরাদ্দ কৃষকের ফসল রক্ষাই নয়, সারা বছর খেয়েপরে টিকে থাকার সঙ্গে জড়িত। এবার ৪৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে ঠিকাদারদের ৪৮টি প্যাকেজের মধ্য ২১টিই একটি সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে যেখানে বরাদ্দ প্রায় ১৮ কোটি টাকা। বলাবলি হচ্ছে, নামমাত্র কাজ করে গোটা বরাদ্দের টাকা ভাগাভাগি করে লুটপাট করার প্রক্রিয়ায় সংসদ সদস্য রতনের সঙ্গে তাদের বিরোধ বাধে। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও হাওররক্ষা বাঁধের কাজ অনেক জায়গায় এখনো শুরুই হয়নি।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড আর ঠিকাদারদের লুটপাটের ফলে অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙে যখন ফসল তলিয়ে যেতে থাকে তখন কৃষক এক পর্যায়ে বুক ঠেলে দেয় বাঁধের উপরে। জলজোছনার নৈসর্গিক রূপ হারিয়ে যায় কৃষকের বুকভাঙা কান্নায়। জোছনার আলোতে কৃষকের চোখের কোণে চিকচিক করে ওঠে অশ্রুবিন্দু। গরিব খেটে খাওয়া কৃষকের বুক ভেঙে দিয়ে তাদের তপ্ত দীর্ঘশ্বাসের অভিশাপে তবুও অভিশপ্ত হয় না এই লুটেরা গোষ্ঠী। সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ আসতে ১১টি নতুন সেতু আর শত বছরের প্রত্যাশার সুরমা নদীর ওপর জননেতা আব্দুজ জহুর সেতু, গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ, সড়ক যোগাযোগ, ব্যাপক উন্নয়ন দিচ্ছেন শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু সড়ক ও জনপথ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিন্ডিকেট দ্বারা যে লুটপাট চালাচ্ছে বছরের পর বছর তাতে সব উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাসভবনে হামলার ঘটনায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে। কিন্তু এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধেও তার নির্বাচনী এলাকায় রয়েছে ব্যাপক অভিযোগ আর অসন্তোষ। সুনামগঞ্জের অর্থনৈতিক রাজধানী হিসেবে চিহ্নিত ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জে চলছে তার শাসন। মানুষের মুখে মুখে বাতাসার মতো হরিলুটের কল্পকাহিনী এতটাই আলোচিত হচ্ছে যে, সরকারি দলের ইমেজ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে সুনামগঞ্জের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সততার রাজনীতির অনন্যসাধারণ স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ স্বার্থের লড়াইয়ে এমপি রতনের বাড়িতে হামলার যে ঘটনা ঘটেছে অতীতেও তার দু-একটি দৃষ্টান্ত রয়েছে, সেটিও আওয়ামী লীগের আমলে।

ভাবছিলাম, মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সেন্স অব হিউমার মানুষকে বরাবর মুগ্ধ করে আসছে। সহজ সরল নিরাবরণ সাদামাটা গণমুখী তৃণমূল রাজনীতির পথ হেঁটে জীবনের পড়ন্ত বেলায় রাষ্ট্রপতি হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি সব দলের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা রেখেছেন। একাধারে সাহিত্যের রসবোধ আরেকদিকে আঞ্চলিক ভাষাকে জাতীয় পর্যায়ে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নিজস্ব বাগ্মিতার ঢংয়ে উপস্থাপনে তার জুড়ি নেই। তিনি জানেন অন্যমনস্ক শ্রোতাদের কীভাবে পিনপতন নীরবতায় রসবোধের মাধ্যমে বক্তৃতায় আকৃষ্ট করতে হয়। কয়েক দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিয়ে বিতর্কের প্রশ্নই ওঠে না, এমন নিরেট সত্য উপস্থাপন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেটের বাইরে জগিবখ্যাত অনেক মনীষীর মতো কীভাবে জ্ঞানে গরিমায় সময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে পারদর্শী ও সমৃদ্ধ হওয়ার বার্তাটি তিনি প্রজন্মকে দিয়েছেন। স্টিব জবস, বিল গেটস থেকে রবীন্দ্র নজরুলকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার বক্তৃতা। তিনি বলেছেন, ম্যাট্রিকে থার্ড ডিভিশন, এইচএসসিতে এক বিষয়ে রেফার্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন কি, ভর্তির ফরমই কেনার সুযোগ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সৌভাগ্য না হলেও ভাগ্যই তাকে আজ চ্যান্সেলর হিসেবে এ জায়গায় এনেছে। মানব কল্যাণের রাজনীতির পথে তার সাফল্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে সম্মানিত করেছে। এখানে আসতে ষাটের ছাত্ররাজনীতি দিয়ে রাজনীতির যে দুর্গম পথ তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে সেটি সাধনায় ত্যাগের আদর্শ, অঙ্গীকার রক্ষা ও কাঠিন্যকে জয় করার। এ পথ সহজ ছিল না, দুর্গম কণ্টকাকীর্ণ পথ। তিনি রসিকতার ছলে বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে থাকলেও রোকেয়া হলে থাকা হয়নি, তবে রোকেয়া হলের আশপাশে ঘুরেছেন। একদিকে আদর্শিক ছাত্ররাজনীতি অন্যদিকে একজন রোমান্টিক তরুণের সময়কে উপস্থাপন করেছেন। রাষ্ট্রপতি ছাত্ররাজনীতির প্রতি ছাত্রসমাজ ও মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাওয়া যে শুভ লক্ষণ নয় সেটি স্মরণ করিয়ে দিতে ভুলেননি। তিনি ডাকসু নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন। হাওরের রাজনীতির রাজপুত্র রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আগামী দিনে আদর্শনির্ভর পরিশীলিত কর্মীনির্ভর গণমুখী রাজনীতির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্যই ছাত্রসংসদ নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন। ডাকসুসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচনের আকুতি জানিয়ে আসছি বছরের পর বছর। এ দাবি সময়ের দাবি। বাংলাদেশের রাজনীতিকে আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম সুমহান মুক্তিযুদ্ধ ও সেনাশাসন কবলিত বাংলাদেশের অবরুদ্ধ গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলন সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তারা সবাই সুস্থ ধারার ঐতিহ্যের ছাত্ররাজনীতির ফসল।

২৭ বছর ধরে ডাকসুসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ার কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন রক্ত সঞ্চালন হচ্ছে না। রাজনীতিতে গণমুখী চরিত্রের নায়কদের শূন্য জায়গায় বিনা পরীক্ষায় রাজনীতিতে আসা খলনায়করা দখল নিচ্ছেন। এতে রাজনীতি মানুষের কল্যাণমুখী চরিত্রই হারাচ্ছে না, সেখানে বিত্তবৈভব ভোগ বিলাস ও ব্যক্তিস্বার্থের কুিসত দিকটিই উন্মোচিত হচ্ছে। রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে রাখতে হলে আর বিলম্ব না করে ডাকসুসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন ঘোষণা করা জরুরি। মেধাবী সৃজনশীল ছাত্রনেতাদের হাতে ছাত্ররাজনীতির পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে এটাই একমাত্র পথ। ২৭ বছর ধরে নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন হলে জাতীয় রাজনীতিতে চুয়ান্ন জন নেতার আবির্ভাব ঘটত। সারা দেশে আদর্শিক ছাত্ররাজনীতির পথে সন্ত্রাসবাদ জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তারুণ্যের প্রতিরোধই গড়ে উঠত। রাজনীতিতে হাজার হাজার আদর্শিক নেতাকর্মী-সংগঠকের ঠাঁই হতো। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মানুষের মনের ভাষা পড়তে জানেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন। তিনি ডাকসু নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে একটি জাতির অন্তরের আকুতিকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন।

বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চল থেকে যারা রাজনীতি করে জাতীয় পর্যায়ে উঠেছিলেন তাদের আরেকজন মরহুম রাষ্ট্রপতি জিল্লুুর রহমান। ভাটি অঞ্চলের মানুষের হৃদয় পড়তে পারা এই রাজনীতিবিদও শৈশবে মা-বাবা হারিয়ে রাজনীতির দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন। জেলখানায় নিহত জাতীয় চার নেতার অন্যতম স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মরহুম জাতীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদ, আবদুল মোমেন ও সর্বশেষ প্রয়াত সংসদীয় রাজনীতির নক্ষত্র সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ভাটি অঞ্চল থেকেই রাজনীতির দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে ঠাঁই নিয়েছিলেন। রাজনীতি যে একটি ব্রত, মানব কল্যাণের মহান পথ দীর্ঘ সংগ্রামের ভিতর দিয়ে আত্মত্যাগের মহিমায় তারা অর্জন করেছিলেন। গণমুখী চরিত্র নিয়ে মানুষের চুলার হাঁড়ির খবর রেখে হৃদয়ের ভাষা পড়তে পড়তে তারা রাজনীতিতে অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। তারা সবাই ছাত্ররাজনীতির পথ ধরেই হেঁটে এসেছিলেন।

ডাকসুসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন ঘোষণা এখন সব উপাচার্য ও অধ্যক্ষদের ওপর নৈতিক দিক থেকে কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবিধানিকভাবে বঙ্গভবনে হাত-পা বাঁধা রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর যখন তাগিদ দেন তখন উপাচার্যদের তার আয়োজন করা দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেওয়া উচিত। সব ছাত্র সংগঠনকে তাদের অধিকার আদায়ের যে শক্তি রাষ্ট্রপতি দিয়েছেন তা কাজে লাগানোর এখন মোক্ষম সময়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রশাসনের উচিত সব ছাত্রসংগঠন ও ছাত্রদের ক্যাম্পাসে মুক্ত বিহঙ্গের মতো চলাফেরার গ্যারান্টি দেওয়া। সেনা শাসন জমানায় ছাত্রদের এই অধিকার হরণ হয়নি। সেনাশাসন মুক্ত গণতন্ত্রের ২৭ বছর ধরে সেটি হরণ করে রাখা হয়েছে।   সব গণতান্ত্রিক শক্তির ভঙ্গুর রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে মেরামত করার স্বার্থে ডাকসুসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ নির্বাচনের দুয়ার এখনই খুলে দেওয়া উচিত।   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক আপনি রাষ্ট্রপতির তাগিদকে আমলে নিয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে তারিখ ঘোষণা করুন।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn