ইমনের পর মতিউরে’র একই আসনে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার ঘোষনা
আল-হেলাল :
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম,এনামুল কবীর ইমন এবারের রমজানে আনুষ্টানিক ভাবে আগাম সাংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ ৪ আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী হবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি গত ১৮ জুন রবিবার সন্ধ্যায় শহরের প্রিয়াঙ্গন কমিউনিটি সেন্টারে জেলা-বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সম্মানে দেয়া তার আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিবার। আমরা আজন্ম বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-চেতনা লালন ও ধারণ করে আসছি। নানা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েও আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরিনি। বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে সততার সাথে রাজনীতি করে আগামী নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করতে চাই। আপনাদের সবার দোয়া ও ভালবাসায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হতে চাই। উন্নয়ন বঞ্চিত সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই।’১৮ জুনের ঘোষনার আগে তিনি বিশ্বম্ভরপুরের দলীয় এক জনসভাব একই ইচ্ছে ব্যক্ত করেন।
দলের সাধারন সম্পাদকের আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষনার পর এবার সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান নিজেকে একই আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থী হবার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তিনি বৃহস্প্রতিবার তার বাসভবনে আয়োজিত দলের এক কর্মীসভায় বলেন, সুস্থ ও সবল থাকলে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দলের মনোনয়ন চাইবো। নৌকার মনোনয়ন পেলে ইনশাল্লাহ নির্বাচন করবো। দলীয় কর্মীসভা থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে দলের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানকে দলের মনোনয়ন প্রদানেরও দাবী জানান তৃণমূল পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী ও সমর্থক।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালামের সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক পিপি এডভোকেট শফিকুল আলমের সঞ্চালনায় কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আলী আমজাদ,জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট মোঃ আব্দুল করিম,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক দিলিপ কুমার বর্মণ,ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান,সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল ছত্তার ডিলার,জাহাঙ্গীর নগর ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসুদ আলী, সেলিম আহমেদ মিঠু,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান,গিয়াস উদ্দিন ডিলার,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মরম আলী,সুনামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর গোলাম সারেবীন সাবু, মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সলিম উল্লাহ,সলুকাবাদ ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক একলাছুর রহমান,সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম,কুরবান নগর ইউপি আওয়ামীলীগ সভাপতি তৈয়ব আলী,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সোহেল মিয়া,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান,বাদাঘাট ইউপি আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক নবাব মিয়া,সুরমা ইউপি আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক তাজুল ইসলাম,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা কালী কুমার দাস,কুরবাননগর ইউপি আওয়মীলীগ নেতা মোঃ আব্দুল কাদির,জাহাঙ্গীর নগর ইউপি আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ সানুর মিয়া, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন,সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল চন্দ্র বিশ^াস,ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা প্রসুন কান্তি দাস,গৌরারং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সহসভাপতি রেজাউল মিয়া,পলাশ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ আমান উল্ল্যাহ,কুরবাননগর ইউপি আওয়ামীলীগ নেতা সুভাষ পাল ও
জেলা ছাত্রলীগ নেতা জিসান এনায়েত রেজা প্রমুখ। নেতৃবৃন্দরা বলেন,প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমপি থাকার কারণে এখানে তৃণমূলের আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপেক্ষিত থাকায় কোন উন্নয়ন হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের দল ক্ষমতাসীন থাকার পরও এই অঞ্চলের সাধারন মানুষজন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ফলে এই অঞ্চলের আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আজ হতাশাগ্রস্থ। তাই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূলের উন্নয়ন ও প্রত্যাশা পূরণে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোর দাবী জানান তারা। সভায়
আলহাজ¦ মতিউর রহমান বলেন,গত ২৪ এপ্রিল আমার হঠাৎ করে হার্ডএটাক হয়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের দোয়া ভালবাসায় আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে ফিরে এসেছি। তিনি বলেন,আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসায় ও থাকায় শিক্ষা স্বাস্থ্য যোগাযোগসহ সকল খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। গড় আয়ূ ৬০ থেকে ৭২ বছরে উন্নীত হয়েছে চিকিৎসার উন্নয়নের কারনে। বিশ^ ব্যাংকের সাথে চ্যালেঞ্জ করে এ সরকারই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করেছে। সারা দেশের ন্যায় আমাদের সিলেট সুনামগঞ্জের রাস্তায় ১৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। সন্ত্রাস দমনে যেখানে আমেরিকা ভারত ব্যর্থ সেখানে আমাদের সরকার দেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করেছে। চলতি দুর্যোগে ফসলহানী ও ব্যাপক সম্পদ নষ্ট হয়ে গেলেও কেউ না খেয়ে মারা যায়নি। অতীতের কোন সরকারই জনগণের স্বার্থে এরকম কোন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের প্রত্যেকটা নাগরিকের লাভ। তার চাইতে বেশী লাভ আমরা যারা আওয়ামীলীগ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। আমরা যারা তৃণমূলের রাজনীতি করি তারাই সঠিক আওয়ামীলীগার। জেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরাই সঠিক সিদ্বান্ত নিয়েছিলাম। মেয়রও আমরা ঠিকমতো নির্বাচিত করেছি। আমাদের মেয়রের দ্বারাই সুনামগঞ্জে অতীতের চাইতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সবকিছু থাকার পরও আমরা এখনও যেন বিরোধীদলের মতো কোনরকমে আছি। এর কারণ সুনামগঞ্জ সদর আসন আমাদের হাতে না থাকা। আমি মন্ত্রী এমপি এখন কোনটাই নই। তারপরও আমার কাছে সাধারন মানুষ থেকে তৃণমূলের সকল নেতাকর্মীরাই আসেন। এর কারণ একটাই আপনারা সকলে আমার অতীতকে মূল্যায়ণ করে আমার সাথে আছেন। আমাদের এই মেসেজ কেন্দ্রে পৌছাতে হবে যে,সদর আসন উদ্ধার ব্যাতিত আমরা দলকে ঠিকাতে পারবোনা। কেন্দ্র বুঝতে পারছে ময়মনসিংহ সদর আসন বাধ দেওয়ায় সেখানকার আওয়ামীলীগের ত্রাহি অবস্থার ব্যাপারে। সুনামগঞ্জে আসার আগেই খবর পাই ধোপাজান নদীর দুপাড়ের বসতিকে বিনষ্ট করার প্রচেষ্টা চলছিলো। দুর্যোগের সময় পবিত্র মাহে রমজানের সময় বালু পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখে গরীবের পেঠে লাথি মারা হয়েছে। কেউ কোন কথা বলেননি। নিরীহ গরীব বারকী শ্রমিকদের বারকী নৌকা পর্যন্ত ধরে নেয়া হয়। আমি হোম মিনিষ্টার ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবের সাথে দেখা করে তাদের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনকে অবগত করেছি যে,আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করে মানবতার স্বার্থে আইনকে পরিচালিত করুন। আইনের প্রয়োগ যেন কখনও অমানবিক না হয়। আপনারা যেই হউননা কেন বুভুক্ষ মানুষের পেটে লাথি দিয়ে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবেননা। তিনি কয়েকজন
ক্ষমতাধর এমপিদের উদ্দেশ্য করে বলেন,সুযোগ আসে টাকা খামানো যায়। আবার মানুষের উপকারও করা যায়। ভোগ বিলাসের জীবন বেশীদিন ঠিকেনা। আমরা পরকালের স্বার্থেই যেন সবকিছু করি। বন্টনে যেন দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি না হয়। বন্ঠনে অনিয়ম দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি শেখ হাসিনা পছন্দ করেননা। আমরা রাজনৈতিক উদ্যোগেই ধোপাজান সুরমা নদীতে আবার বালু পাথর সরবরাহের ব্যাবসা চালু করতে সক্ষম হয়েছি। আলহাজ¦ মতিউর রহমান দৃঢ় আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন,সুস্থ থাকলে সুনামগঞ্জ সদর আসনেই আমিই নির্বাচন করবো ইনশাল্লাহ।