সন্ত্রাস দমনে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি যে, জাতির উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাবে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অগ্রযাত্রায় তাদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। কাজেই এ কথা মাথায় রেখেই ভবিষ্যতে দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের কাছেই নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পণ করা উচিত।’ প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নেতৃত্ব গ্রহণে ক্ষেত্রে চারটি বিশেষ গুণ থাকতে হবে। সেগুলো হচ্ছে-একজন কমান্ডার, কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষক হওয়ার জন্য প্রথমত, সেনা কর্মকর্তাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস থাকতে হবে। দ্বিত্বীয়ত, তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। দেশ ও সমাজের সেবার মানসিকতা এবং উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। তৃতীয়ত, তাদের মাঠ পর্যায়ের সাফল্য থাকতে হবে এবং চতুর্থত, তাদের অবশ্যই নেতৃত্বের যোগ্যতা, পেশাগত এক্সিলেন্স, নিয়মানুবর্তিতা, সততা এবং নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সিলেকশন বোর্ডের সদস্যদের প্রতি তার দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস থাকার উল্লেখ করে বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন-সিলেকশন বোর্ডের সদস্যরা সকল ব্যক্তিগত পছন্দ, অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থাশীল, দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদেরই পদোন্নতির জন্য নির্বাচন করবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনা প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহম্মদ শফিউল হক, মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূইয়া এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
সেনা সদস্যদের জাতীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেনাবাহিনীর সদস্যরা যেভাবে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করেছে তা জনগণের প্রভূত প্রশংসা ও বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। সেনাসদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাঙ্গামাটিতে উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালীন দুইজন সেনা কর্মকর্তাসহ পাঁচজন সহকর্মীকে হারানোর ব্যথা নিয়ে রোজা রেখে আর্তমানবতার সেবায় আপনাদের এই আত্মত্যাগ একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমি সেনাবাহিনীর সদস্যদের আত্মত্যাগকে গভীর সমবেদনার সাথে স্মরণ করছি।
সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ও জঙ্গি তত্পরতা দমনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ও সিলেটের আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর কমান্ডো ইউনিটের জঙ্গিবিরোধী অভিযান দেশে ও বিদেশে সেনাবাহিনীর উন্নত প্রশিক্ষণ, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ৭ দশমিক ২ শতাংশ জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ তার সরকারের নেতৃত্বে দেশের সুষম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের একটি খণ্ডচিত্রও তুলে ধরে বলেন, তার সরকারের এই মেয়াদেই একইসঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি দুই অংকের সংখ্যা থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ফলে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৭২ বছরে উন্নীত হয়েছে।