ভারতের ‘মিনি ইন্ডিয়া’ খ্যাত ৪০৩ আসনের উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির ভূমিধস জয় (৩২৫ আসনে জয়ী) দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দেশে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোর মনোভাব দেখাতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে বিজেপির  সে কথা বলাই বাহুল্য। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এর কারণ হিসেবে দেশটির জাতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে বলছে, ক্ষমতার  তা যেকোনো সরকারের জন্য ক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রদর্শনের হাতিয়ার হয়ে যায়। আর সেই চিত্রই এখন দেখা যেতে পারে নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে।

teesta

ফলে বিশ্বরাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গ্রহণযোগ্যতাও বাড়বে। মোদির এইপ্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও বিভিন্ন ইস্যুতে প্রভাব ফেলবে। আর এই প্রভাবের প্রথম কোপ পড়তে পারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর; আগামী এপ্রিলে ভারত সফরে যাবেন তিনি। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বাংলাদেশের সঙ্গে পানিসম্পদ বণ্টন চুক্তি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মতো প্রতিবন্ধকতার পথেই হাঁটতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। একই ধরনের পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে প্রতিবেশী নেপালের সঙ্গেও। সম্প্রতি নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় এ আশঙ্কা করছেন ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে আগের অবস্থানের পরিবর্তন হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গত বছর ভারত অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মিরের উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর ইসলামাবাদের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক জটিল হয়ে ওঠে। teesta

পাক জঙ্গিরা ওই হামলায় জড়িত অভিযোগ এনে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সীমান্ত রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের ভেতরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনার সিদ্ধান্তও নেয় ভারত। এরপর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের আনুষ্ঠানিক সব কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। তবে বন্দিবিনিময় ও রুটিন কিছু বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে। এদিকে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অভিযানের সুফল নির্বাচনী প্রচারণার সময় পেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি; সীমান্তে বসবাসকারী অধিকাংশ ভারতীয় সেই সময় নরেন্দ্র মোদির সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো কঠোর সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তার এই নীতির জনপ্রিয়তা প্রমাণিত হয়েছে প্রাদেশিক নির্বাচনে বিজেপির বিশাল জয়ের মাধ্যমে। এই বিজয় পাকিস্তানের নেতৃত্বেও প্রভাব ফেলতে পারে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn