তাহিরপুর সীমান্ত চোরাচালানের নিরাপদ রুট,২২টি গরু আটক
তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্র নগর,চাঁনপুর ও বালিয়াঘাট সীমান্তকে চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে চোরাচালানীরা। সোমবার রাত ৯টায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ২২টি গরু আটক করেছে বিজিবি। কিন্তু চোরাচালানীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। আটককৃত গরুর মূল্য অনুমান ৬ লক্ষ টাকা।এলাকাবাসী জানায়,সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয় দিয়ে বীরেন্দ্রনগর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে হযরত আলী,একই গ্রামের মৃত জামাল মিয়ার ছেলে মঞ্জুল মিয়া,লিটন মিয়া,নজরুল মিয়া ও রতনপুর গ্রামের নজর আলীর ছেলে শাজাহান মিয়া গং প্রতিদিনের মতো সোমবার রাত ৯টায় বাগলী এলসি পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে অর্ধশতাধিক গরু পাচাঁর করে ইঞ্জিনের নৌকা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি অভিযান চালিয়ে ১৩টি গরু আটক করলেও চোরাচালানীদের কাউকে আটক করেনি। যার ফলে বাকি গরুগুলো নিয়ে চোরাচালানীরা ইঞ্জিনের নৌকা যোগে পালিয়ে যায়। এছাড়া এই সীমান্তের সুন্দরবন,বাগলী ও রন্দুছড়া দিয়ে উপরের উল্লেখিত চোরাচালানীরা সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে ওপেন চুনাপাথর ও কয়লা পাচাঁর করছে। পাচাঁরকৃত প্রতিটি গরু থেকে বিজিবি ক্যাম্পের নামে ১ হাজার টাকা,থানার নামে ৬ শত টাকা,স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের নামে ৫শত টাকা ও প্রতি নৌকা চুনাপাথর থেকে বিজিবি,পুলিশ,সাংবাদিক,কাস্টমসসহ আরো বিভিন্ন জনের নাম ভাংগিয়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা এবং প্রতিটন কয়লা থেকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার ভোররাতে বাগলী,সুন্দরবন ও রন্দুছড়া এলাকা দিয়ে চুনাপাথর পাচাঁরের সময় বিএসএফের গুলিতে ৩ চোরাচালানী গুলিবৃদ্ধ হয়। এসময় চুনাপাথর বোঝাই ২টি ইঞ্জিনের নৌকা বিএসএফ আটক করে। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ২টি নৌকা ফেরত নিয়ে আসে বিজিবি।
অন্যদিকে চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলা দিয়ে চাঁনপুর গ্রামের মাদক মামলার জেলখাটা আসামী আবু বক্কর,বড়গোফ গ্রামের রফিক মিয়া,শিমুলতলা গ্রামের সাহিবুর মিয়া,মানিগাঁও গ্রামের সুজন মিয়া,বড়টেক গ্রামের সিদ্দু মিয়া বারেকটিলা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে ৩০টি গরু পাচাঁর করে নিয়ে যাওয়ার সময় গুচ্ছগ্রাম নামস্থান থেকে ৯টি গরু আটক করে বিজিবি। আর বাকি গরু বাদাঘাট বাজারের নিয়ে বিক্রি করে ফেলে চোরাচালানীরা। পাচাঁরকৃত প্রতিটি গরু থেকে চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের নামে ১৫০০টাকা,থানার নামে ৫শত টাকা,উত্তর বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নামে ৪শত টাকা,স্থানীয় ২ সাংবাদিকের নামে ১শত টাকা,চানপুর গ্রামের ২ মেম্মারের নামে ৩ শত টাকা চাঁদা নিচ্ছে বিজিবি ও পুলিশের সোর্স পরিচয়ধারী আবু বক্কর,রফিক মিয়া ও বাদাঘাট বাজারের মস্তো মিয়া। এছাড়াও চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত নয়াছড়া দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে চুনাপাথর পাচাঁর করে যাদুকাটা নদীর তীরে নিয়ে মজুদ করছে চোরাচালানী লাল মিয়া,কালাম মিয়া,আবুল কাসেম,আবু বক্কর গং। এবং এই সীমান্তের রাজাই,কড়ইগড়া ও গারোঘাট দিয়ে কয়লা পাচাঁর করা হচ্ছে। পাচাঁরকৃত প্রতিট্রলি চুনাপাথর থেকে বিজিবি ক্যাম্প,চেয়ারম্যান,মেম্বার ও থানার নামে ৫শত টাকা ও প্রতিবস্তা কয়লা থেকে ১৫০টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে বিজিবির সোর্স আবু বক্কর। অপরদিকে বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা ছড়া,টেকেরঘাট শহিদ মিনার ও মন্দির সংলগ্ন এলাকা দিয়ে দুধেরআউটা গ্রামের চাঁদাবাজি মামলা নং-জিআর ১৬৩/০৭এর জেলখাটা আসামী চোরাচালানী ও ইয়াবা ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান জিয়া,তার সহযোগী লাকমা গ্রামের আব্দুল হাকিম ভান্ডারী,হাসান আলী,রতন মহলদার ও তিতু মিয়া গং ভারত থেকে ওপেন কয়লা ও চুনাপাথর,মদ-গাজা,হেরুইন,ইয়াবা পাচাঁর করছে। পাচাঁরকৃত মালামাল থেকে বিজিবি মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আটক করলেও উপরের উল্লেখিত চোরাচালানীদের আটক করেনা। যার ফলে সীমান্ত চোরাচালান দিনদিন বেড়েই চলেছে। পাচাঁরকৃত প্রতিট্রলি চুনাপাথর থেকে বিজিবি,পুলিশ ও ২ সাংবাদিকদের নামে ৬শ টাকা,প্রতিবস্তা কয়লা থেকে ১২০টাকা ও মাদকদ্রব্য থেকে সাপ্তাহিক ৫হাজার টাকা চাঁদা নিচ্ছে জিয়াউর রহমান জিয়া ও আব্দুল হাকিম ভান্ডারী।সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক নাসির উদ্দিন ২২টি গরু আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।