দ্রুত সময়ে জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন প্রবাসীরা
নতুন ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত যেকোনো সেবার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকরা। জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন, ভোটার এলাকা স্থানান্তর, হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত সেবা খুব কম সময়ের মধ্যে পাবেন তারা।এসব সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা প্রবাসীদের হয়রানি করলে সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সকল নির্বাচন কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।সংশ্লিষ্টরা জানান, এ নির্দেশনার ফলে প্রায় এক কোটি প্রবাসী নাগরিক জাতীয়পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা দ্রুত পাবেন। তবে বাংলাদেশে এসে তাদের এ সেবানিতে হবে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মানুষের ভোগান্তি কমাতে দেশের প্রতিটি উপজেলা ও থানা পর্যায়ের নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা দেয়া হচ্ছে। ওই অফিসেই নতুন ভোটার অন্তভর্ক্ত করা হয়। কিন্তু নির্বাচন অফিসগুলোতে পর্যাপ্ত জনবল ও কম্পিউটারসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদির সংকট থাকায় এ সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নির্বাচন কর্মকর্তাদের।এতে সাধারণ নাগরিকেরাও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সাধারণ সেবা পেতেও দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে প্রবাসীরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। কেননা তারা অল্প কয়েক দিনের জন্য বাংলাদেশে এসে আবারও কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন। তাদের অনেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই ফিরে যেতে হচ্ছে। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় পরিদর্শনে গেলে এসব বিষয় উঠে আসে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নতুন ভোটার নিবন্ধন: বিদেশ থেকে আসা বাংলাদেশী নাগরিক ভোটার হতে উপজেলা ওথানা নির্বাচন অফিসে গেলে তাকে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্তনির্দেশনায় বলা হয়েছে, তাদের প্রয়োজনীয় নূন্যতম কাগজপত্রের ভিত্তিতেঅথববা ভোটার নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঘাটতি থাকলেও তার পুরণকৃতফরমের ডাটা এন্ট্রি ও বায়োমেট্রিক নিয়ে রাখতে হবে। যাতে ওই প্রবাসীরপরবর্তীতে আর নির্বাচন অফিসে স্বশরীরে হাজির হতে না হয় এবং তার পক্ষেরকেউ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে তা তদন্ত করে ডাটা আপলোড করা যায়।অগ্রাধিকার সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোন ধরনের শৈথিল্য ও অবহেলা গ্রহণযোগ্য হবে না বলেও নির্দেশনা হুঁশিয়ারি করা হয়েছে।ইসির কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী নতুন ভোটার হতেসংশ্লিষ্টের বিভিন্ন ধরনের প্রমাণাদি ও ডকুমেন্ট এবং আবেদনপত্র পূরণ করেসংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা অফিসে যেতে হয়। প্রয়োজনীয় সকল প্রমাণাদি ওকাগজপত্র দেখাতে পারলে তাকে ভোটার করার জন্য ডাটা এন্ট্রি, ছবি তোলা,আঙ্গুলের ছাপ নেয়াসহ বাকি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। নতুন নির্দেশনাঅনুযায়ি প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র তাৎক্ষণিক জমা দিতে না পারলেও প্রবাসীদের ডাটা এন্ট্রি, ছবি তোলা, আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হবে।
ভুল সংশোধন ও অন্যান্য সেবা: বিদেশ থেকে আসা কারও জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলথাকলে তা সংশোধন কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলেও ভুল সংশোধনের আবেদনগ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে বিনয়ের সঙ্গে পরামর্শ দিতেm হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে অস্বীকার করলে তা একটি প্রতিবেদন আকারে আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাতে হবেএকইভাবে ভোটার এলাকা স্থানান্তর এবং হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া আইড কার্ড পুনরায় তোলার ক্ষেত্রেও দ্রততার সঙ্গে করতে বলা হয়েছে।প্রবাসীদের পাশাপাশি যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণআচরণ করতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রবাসীদের পাশাপাশি দেশের সকলনাগরিকের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ এবং দ্রুততম সেবা প্রদান করতে হবে। কোন ব্যক্তির আবেদন জমা নেয়ার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করা যাবে না। এমনকি প্রয়োজনীয় বা চাহিদা অনুযায়ী কোন ডকুমেন্ট না দিলে বিনয়ের সঙ্গে তা জমা দিতে অনুরোধ করতে হবে। এরপরও আবেদনকারী ওইসব ডকুমেন্ট জমা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তা প্রতিবেদন আকারে জানাতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদসাইদুল ইসলাম বলেন, কমিশনের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী আবেদন জমা নিতেঅপারগতা প্রকাশ ও অসদাচারণ করার অভিযোগ পাওয়া গেলে। তা যাচাই করে জেলানির্বাচন অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারকে প্রতিমাসে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত: দেশের ৫১৭টি থানা ও উপজেলা অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্তসেবা দিচ্ছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।