টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দীর্ঘ ২০ বছরের ঘর সংসার ছেড়ে স্বামী-সন্তানকে রেখে পরকীয়ার টানে উপজেলার তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদ আনোয়ারের হাত ধরে পালাল রোজিনা বেগম নামের এক গৃহবধূ।গত শনিবার স্বামীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন রোজিনা বেগম। এ ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যানকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সাঈদ আনোয়ার মির্জাপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য। এ ঘটনায় রোজিনার স্বামী আবুল হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে চেয়ারম্যান আনোয়কে আসামি করে টাঙ্গাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তরফপুর মধ্যপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আবুল হোসেন মোল্লা ২০ বছর আগে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন মমিননগর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে রোজিনাকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে রাকিবুল হাসান দশম শ্রেণির ছাত্র। ছোট ছেলে রাফির বয়স ৫ বছর। সংসারের অভাব-অনটন দূর করতে বিয়ের প্রায় ১০ বছর পর স্বামী আবুল হোসেন সৌদিআবর পাড়ি জমান। সেখান থেকে দুই বছর পর পর ছুটিতে দেশে আসেন। এর মধ্যে স্ত্রী রোজিনার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ফেরত ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ আনোয়ারের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঘটনাটি জানার পর দুই মাস আগে আবুল হোসেন মোল্লা সৌদিআরব থেকে দেশে চলে আসেন। এ নিয়ে পরিবার ও এলাকায় একাধিকবার সালিশি বৈঠক হয়।

গত শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর রোজিনা স্বামীর সঙ্গে টাঙ্গাইল শহরে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা শেষে রোজিনা শহরের আদি টাঙ্গাইল এলাকা থেকে স্বামীকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। পরে রোজিনার স্বামী আবুল হোসেন মোল্লা চেয়ারম্যান সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন বলে আবুল হোসেন অভিযোগ করেন।কিন্তু এক সপ্তাহ পার হলেও স্ত্রী রোজিনাকে ফেরত না দেয়ায় আবুল হোসেন  শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইউপি চেয়ারম্যান সাইদ আনোয়ারকে আসামি করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, আমি লেখাপড়া জানি না। গত ৯ বছরে সংসারের খরচ বাদে প্রায় ১৩ লাখ টাকা পাঠিয়েছি। চেয়ারম্যানের সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক জানার পর দুই মাস আগে বাড়ি আসি। পরিবার ও এলাকার লোকজন নিয়ে বৈঠকও করি। স্ত্রী রোজিনা আমাকে টাকার কোনো হিসাব দিতে পারেনি। পালিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকে রোজিনা বাড়ির লোকজনের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে শুরু করেন। আমরাও তাকে কিছু বলিনি। এই সুযোগে গত শনিবার টাঙ্গাইল শহর থেকে চেয়ারম্যানের হাত ধরে পালিয়ে যান রোজিনা। এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় আবুল হোসেনের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু রোজিনার সঙ্গে প্রেমের কোনো সম্পর্ক ছিল না। সে কোথায় আছে তা আমি জানি না। গ্রামবাসী আমাকে জানিয়েছে রোববার রোজিনা বাড়ি ফিরবে। তাহলে আপনি এলাকায় নেই কেন জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, আমি তো এলাকায় থাকি। কেউ খুঁজে পায় না এর মানে এই নয় আমি এলাকার বাইরে। এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এমটিনিউজ

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn