বরিশাল: এ যেন আর এক মালালার গল্প। এলাকায় নারী সহিংসতা, নারী বৈষম্য, যৌন নিপীড়ন, বাল্য বিয়ের আয়োজন সেখানেই প্রতিরোধ করেন বরগুনার সাহসী তনয়া সাজেদা। তাই গোটা বরিশালে এখন সাজেদার নাম আলোচিত হতে শুরু করেছে সম্মানের সাথে। অনেকে আবার নোবেল জয়ী মালালা ইউসুফজাই’র সাথে তুলনা করেছেন। আর পিতা-মাতা বেশ আনন্দিত সাহসী এই কন্যাকে নিয়ে। সাজেদাকে উদাহরণ করে কথা বলছেন স্থানীয় প্রশাসনও। যদিও এই সাহসী সাজেদার এগিয়ে যাবার গল্পটা কিন্তু অতটা সহজ নয়। এরই মধ্যে এলাকার ১০৭টি বাল্য বিয়ে বন্ধ করেছে নিজ প্রচেষ্টায়। বরগুনার এক হতদরিদ্র পরিবারের ওই কিশোরী সাজেদা নীরবেই এত সব বড় বড় কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের পড়াশোনাও। যার স্বীকৃতিস্বরুপ সাজেদা আক্তারকে ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পিস প্রাইজ-এর জন্য বাংলাদেশ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

এই পুরস্কার শিশুদের নোবেল পুরস্কার হিসেবে খ্যাত। শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য যেসব শিশু সাহসের সঙ্গে লড়াই করে আসছে প্রতিবছর তাদের এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ২০১৩ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিল পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই। সাজেদা আক্তার বরগুনার সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা গ্রামের হত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ও সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সাজেদার বাবা সানু মিয়া দরিদ্র ভূমিহীন রিকশা চালক। তিনি বলেন, ‘রিকশা চালিয়ে সংসার চালানোই কষ্ট। এত কষ্টের পর লোকজনে যখন মাইয়্যার সাহসী কাজের কথা কয়, তহন মনটা খুশিতে ভইর‌্যা যায়।’ বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুরুজ্জামান বলেন, একটি দরিদ্র পরিবারের কিশোরী যেভাবে দারিদ্র, বাল্য বিয়ে, যৌন হয়রানি, ঝরে পড়া শিশুদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে নেয়া এবং মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, সেটা আমাদের সমাজে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn