দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের একদম শেষভাগে এসে বাংলাদেশ দলের মেন্যুতে এখন খাবার একটাই- হার! তিন ফরম্যাটে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের এসব হারের কোনটি বেশি তেতো, তা নিয়ে তর্ক হতে পারে। তবে বাংলাদেশের প্রাপ্তির ঝুলিটা যে একেবারেই শূন্য, তা একবাক্যে মেনে নেবেন সবাই। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ার পর প্রথম টি ২০-তেও ২০ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। গত বছর ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে সব ম্যাচেই হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় তার পুনরাবৃত্তির প্রবল শঙ্কা।তবে আগের ম্যাচে যেভাবে লড়াই করেছে বাংলাদেশ, সেখান থেকে আরেকটু এগোনো গেলে শেষ ম্যাচে এসে ভাঙতে পারে পরাজয়ের বৃত্ত। স্বস্তির জয়ে দুঃস্বপ্নের সফরের শেষটা অন্তত রাঙিয়ে রাখা সম্ভব। সে জন্য ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্যাটে-বলে একসঙ্গে জ্বলে উঠতে হবে সবাইকে। অন্যথায় দেশে ফিরতে হবে রিক্ত হস্তে। পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস পার্কে আজ টি ২০ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সফরের শেষ ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।

বেনোনির প্রস্তুতি ম্যাচটি বাদ দিলে এই পচেফস্ট্র–মেই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের দুঃস্বপ্নের দিন-রাত্রি। প্রথম টেস্টের সেই ভেন্যুতেই আজ সফরের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। মাঝের অভিজ্ঞতাটা ভুলে যাওয়ার মতো। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণের পর প্রথম টি ২০-তে প্রথমবারের মতো লড়াই করার সান্ত্বনা পাওয়া গেছে। এবার সেই সান্ত্বনাকে জয়ে অনূদিত করার চ্যালেঞ্জ।ব্লমফন্টেইনের হারা ম্যাচ থেকেই জয়ের আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন ওই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁপিয়ে দেয়া সৌম্য সরকার। নিজের কাজটা শেষ করে আসতে না পারলেও দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন এই বাঁ-হাতি ওপেনার। দক্ষিণ আফ্রিকার ১৯৫ রান তাড়ায় সৌম্যর ব্যাটে নয় ওভারে দুই উইকেটে ৯২ তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। সৌম্য যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ৪৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে সৌম্য ফিরতেই পথ হারায় দল।

শেষ পর্যন্ত ১৭৫ রানে থামা বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে মূলত মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা। তিন থেকে ছয় নম্বরে নামা সাকিব, মুশফিকুর, সাব্বির ও মাহমুদউল্লাহর কেউ একজন দাঁড়িয়ে গেলে হয়তো শেষ হাসি হাসত বাংলাদেশই। এ জায়গাটায় আজ উন্নতির কোনো বিকল্প নেই।অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আরেকটি জায়গায় উন্নতির তাগিদ দিয়েছেন দলের ব্যাটসম্যানদের। প্রথম টি ২০-তে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে ডট বল। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ২২টি ডট বলের বিপরীতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ডট বল দিয়েছেন ৪৫টি। সংখ্যাটা অর্ধেক হলেই কিন্তু জিতে যেত বাংলাদেশ। কিন্তু বলে-বলে সিঙ্গেল নিয়ে চাপ কমানোর পথে না হেঁটে চার-ছক্কা হাঁকাতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন সৌম্যরা। দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসে চার-ছক্কা থেকে এসেছে ৮৮ রান, বাংলাদেশের ইনিংসে ৯৮। অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আখেরে সর্বনাশই হয়েছে বাংলাদেশের। সিঙ্গেলসের গুরুত্বটা সাকিবরা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করলেই মঙ্গল। ভুলে যাওয়ার মতো এ সফরে শেষ ম্যাচে নতুন করে আর হারানোর কিছু নেই বাংলাদেশের। আছে কিছু পাওয়ার। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার!

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn