জাবিতে বসেছিল প্রজাপতি মেলা-২০১৭।
কিছু ডালে বসে আছে, কিছু ফুলে। আবার কিছু জালের ভেতর উড়াউড়িতে ব্যস্ত। এমন হরেক রকম প্রজাপতির ছুটাছুটি ছিল চোখে পড়ার মতো। এমন মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী নিয়ে শনিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বসেছিল প্রজাপতি মেলা-২০১৭। হলুদ, নীল, কালো-সাদাসহ বিভিন্ন রঙের প্রজাপতির রঙে মন রঙিন করেছিলেন ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা। সকাল থেকেই দর্শনাথীরা ভিড় জমাতে থাকে ক্যাম্পাসে। কেউ সেলফি তুলতে ব্যস্ত প্রজাপতির সঙ্গে, অনেককেই ছোট সোনামণিদের প্রজাপতি দেখাতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে আসা দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাঈশা জানায়, এতো গুলো প্রজাপতি কখনো একসাথে দেখিনি। সব গুলো বাসায় নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। আমার প্রজাপতি অনেক পছন্দ। মেলায় এসে অনেক ভালো লাগছে। ‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ এ স্লোগানে প্রতিবছর জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে এমন মেলা বসে। বেলা ১১টার দিকে জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সামনে এ মেলার উদ্বোধন করেন ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রজাপতির সৌন্দর্যের পেছনে দৌঁড়াদৌড়ি করেনি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। প্রজাপতি আমাদের প্রকৃতিতে কি অবদান রাখছে তা আমরা এ মেলা থেকে জানতে পারি। তাই এ মেলা জাবিতে আয়োজন করতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।’
উদ্বোধন শেষে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এছাড়া ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির হাট দর্শন, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বিতর্ক, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা ও প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী। এবারের মেলা থেকে বিশ্বব্যাপী প্রজাপতির উপর গবেষণায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য জাপানের গ্র্যাজুয়েট ইউনিভার্সিটি ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিস বিভাগের অধ্যাপক ড. কেনটারো আরিকাওয়াকে ‘বাটারফ্লাই এওয়ার্ড-১৭’ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ‘ইয়াং বাটারফ্লাই ইনথুসিয়অস্ট এ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে জাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আফলাতুন কাইসার। মেলার আহ্বায়ক ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন মেলা সম্পর্কে বলেন, দেশে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। অবকাঠামো বেড়ে যাওয়া, গাছ কাটা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে প্রজাপতির সংখ্যা দিন দিন কমছে। তাই এ প্রজাপতি সংরক্ষণে মানুষের সহমর্মিতা ও সচেতনা প্রয়োজন। আর এ জন্যই প্রজাপতি সংরক্ষণে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরির লক্ষে এ মেলার আয়োজন।