‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’, কী আশ্চর্য!-ব্যারিস্টার ইমন
ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন ::
৭-ই নভেম্বরকে বিএনপি বলছে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’। কিন্তু বীর মুক্তিযুদ্ধাদের হত্যা করা ছাড়া প্রকৃত অর্থে সে দিন কিছুই ঘটেনি।১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলো; ৩ নভেম্বরে জেলের ভেতরে জাতীয় নেতাদের হত্যা করা হলো; মোশতাকের টুপির ভেতরে দেশ যখন তলিয়ে যাচ্ছে তিনি কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করে বলতে লাগলেন, ‘লেট আস ওয়েট এন্ড সি’।জিয়াউর রহমানের নির্লিপ্ততায় এগিয়ে আসেন খালেদ মোশারফ। সিদ্ধান্ত নেন, সেনাবাহিনির প্রধান হিসেবে জিয়াউর রহমান যেহেতু চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন তাই তারা তাকে বন্দী করবেন এবং মোশতাক ও তার সহযোগীদের আত্মসমর্পনে বাধ্য করবে। সে দিন জিয়াউর রহমান এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেনাবাহিনি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। পদত্যাগের পাশাপাশি এই আবেদন করেন যে, তাকে যেন অবসরকালীন পেনশন ও ভাতাটুকু দেয়া হয়। বন্দী ও চালাক জিয়াউর রহমান আরো একটি কাজ করেন। তিনি বুঝতে পারেন যে যদি কেউ তাকে রক্ষা করে সেটা কর্নেল তাহের। তাই তিনি শোবার রুমে গিয়ে কর্নেল তাহেরকে ফোন করে নিচু স্বরে বলেন, ‘তাহের লিসেন কেয়ারফুললি, আই এম এই ডেঞ্জার, সেভ মাই লাইফ’। কর্নেল তাহের ব্যাপকভাবে সেনাবাহিনিতে জনপ্রিয় ছিলেন। জিয়া সেই সুযোগ নিলো। কর্নেল তাহেরের চেষ্টায় জিয়া ৭ নভেম্বর মুক্ত হলো। খালেদ মোশারফসহ অসংখ্য দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা সে দিন পরিস্থিতির ভেতরে প্রাণ দিলো। জিয়াকে যিনি মুক্ত করে আনলেন সেই কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিলেন জিয়া। দেশপ্রেমী এতোগুলো মুক্তিযোদ্ধার প্রাণ নিয়ে জিয়ার দল দিনটিকে ঘোষণা করলো, ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’। কী আশ্চর্য! কী আশ্চর্য।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ।